ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

গ্রামীণফোনের অবৈধ ইন্টারনেট সোনালীতে, বিটিআরসির শোকজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
গ্রামীণফোনের অবৈধ ইন্টারনেট সোনালীতে, বিটিআরসির শোকজ

ঢাকা: টেলিযোগাযোগ আইন ভঙ্গ করে সোনালী ব্যাংকে অবৈধভাবে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ায় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শাতে বলেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সোনালী ব্যাংকের ৫৫১টি শাখায় দেওয়া হয় এই সংযোগ।

 

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) বুধবার এই চিঠি পাঠায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্রাহকদের ‘গো ব্রডব্যান্ড’ ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে। যা টেলিকম আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘণ।  

এ অবস্থায় গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে।
 
অবৈধভাবে সেবা দেওয়ায় নোটিসের সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারলে গ্রামীণফোনকে ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি কর্মকর্তারা।
 
অবৈধভাবে সোনালী ব্যাংকের ‘গো ব্রডব্যান্ড’ সার্ভিসের বিষয়ে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসির কাছে লিখিত অভিযোগ করে। এরপর বিষয়টি নজরে আসে।
বিটিআরসির চিঠিতে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংককে ইন্টারনেট সেবা দিতে গ্রামীণফোন ফাইবার অপটিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা করেছে, যা মোবাইল অপারেটর লাইসেন্সের নীতিমালা-বিরুদ্ধ।
 
টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স নীতিমালা অনুযায়ী, মোবাইল অপারেটরগুলো শুধু মোবাইল ডিভাইস এবং মডেমের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে। গ্রামীণফোন একটি থ্রিজি লাইসেন্স ধারী অপারেটর হওয়ায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কোন প্রকার আইএসপি লাইসেন্স নেই। এজন্য অপারেটরটির পক্ষ থেকে সোনালী ব্যাংক বা অন্য কাউকে ইন্টারনেট সেবা বা অনুরুপ কোন সেবা দেবার কোন সুযোগ নেই।
 
গ্রামীণফোনকে দেওয়া বিটিআরসির চিঠিতে বলা হয়, ইন্টারনেট সেবা দিতে গ্রামীণফোন সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিল, তা কমিশনের অনুমতি নিয়ে করেনি এবং এ সেবা দিতে গ্রামীণফোনের এ ধরনের সেবার কোনো লাইসেন্স নেই।
 
২০১২ সালের জুন মাসে গ্রামীণফোন আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) অগ্নি ও এডিএনের সঙ্গে যৌথভাবে ইন্টারনেট সেবা চালুর অনুমতি পায়।
 
ওই অনুমতিপত্রে বলা আছে, ‘কেবল মাত্র কো-অর্ডিনেশন সার্ভিস’ নামে এডিএন ও অগ্নি আইএসপির সঙ্গে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সেবাকেন্দ্র ব্যবহার করে ‘ইনফাস্ট্রাকচার শেয়ারিং’ নীতিমালা অনুযায়ী ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে পারবে।

প্রাথমিক অবস্থায় চুক্তির মেয়াদ তিন বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল।
 
‘এডিএন’ ও ‘অগ্নি’ কেবল কো-অর্ডিনেশনেটেড সেবা দিতে পারবে বলে অনুমতিপত্রে উল্লেখ থাকলেও গ্রামীণফোন তা না মেনে আইএসপি সেবা দিয়েছে।
 
গ্রামীণফোন ‘গো ব্রডব্যান্ড’ নামে সোনালী ব্যাংকে ট্রান্সমিশন সংযোগ দিয়েছে। এটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার নীতিমালার ৪.৭ এবং ৪.৮ নম্বর শর্তানুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ বলে জানায় বিটিআরসি।
 
আইন অনুযায়ী, মোবাইল ফোন অপারেটররা অপটিক্যাল ব্যাকবোন ট্রান্সমিশন স্থাপন করতে পারে না। এর অনুমোদন রয়েছে শুধু অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ট্রান্সমিশন সেবাদানকারী এনটিটিএন (ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) প্রতিষ্ঠানগুলোর।
 
‘গো ব্রডব্যান্ড’ নিয়ে গ্রামীণফোন বেশ কয়েকটি অনিয়ম করেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
এতে আরও বলা হয়, গ্রামীণফোন ইনফ্রাস্ট্রাকচার শেয়ারিং গাইডলাইন অমান্য করেছে। নীতিমালা অনুসারে তারা অনুমতি ছাড়া ইনফ্রাস্টকচার শেয়ার বা লিজ দিতে পারে না। গ্রামীণফোন অন্য সব মোবাইলফোন অপারেটরের মতই কোনো ওয়্যার কানেকটিভিটি দিতে পারে না।
 
চিঠিতে সোনালী ব্যাংকে ইন্টারনেট সার্ভিস ও ট্রান্সমিশন সেবা দিতে গ্রামীণফোনের সম্পাদিত চুক্তি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
 
বিটিআরসি জানায়, এর আগেও দুই দফা গ্রামীণফোনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি। কমিশন সভায় এ বিষয়ে শোকজের সিদ্ধান্ত হয়।

চিঠির একটি অনুলিপি সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপককেও পাঠানো হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময় ১৫৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
এমআইএইচ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।