ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

রাত পোহালে মমতা-প্রিয়াঙ্কার ভোটের লড়াই

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
রাত পোহালে মমতা-প্রিয়াঙ্কার ভোটের লড়াই

কলকাতা: রাত পোহালেই পশ্চিমবঙ্গে তিন বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্র এবং দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর কেন্দ্রে হবে নির্বাচন।

ভাবনীপুরের হাইভোল্টেজ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এই নির্বাচনে পরাজিত হলে তাকে ছাড়তে হবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর পদ। পরাজিত হলে আর কোনো কেন্দ্র থেকে তিনি প্রার্থীও হতে পারবেন না। তৃণমূল সুপ্রিমো হেরে গেলে পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হবে সাংবিধানিক সংকট।

চলতি বছরের এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। মমতার দল নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেলেও দলের প্রধান নন্দীগ্রামে পরাজিত হন। তৃণমূল রাজ্য সরকার গঠন করায় স্বভাবতই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা। তবে সংবিধান অনুযায়ী, কোনো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব ধরে রাখতে হলে যেকোনো একটি কেন্দ্র থেকে ছয় মাসের মধ্যে জিতে আসতে হবে মমতাকে। তার সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৪ নভেম্বর। সে কারণেই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন মমতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে মমতাকে ভবানীপুর কোনোকালেই নিরাশ করেনি। কেন্দ্রটি তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি এবং রেকর্ড ভোটে মমতার জেতার সম্ভাবনাই বেশি।

অপরদিকে ভবানীপুর কেন্দ্রকে বলা হয় ‘মিনি ইন্ডিয়া’। ভারতের সব ভাষাভাষী মানুষের বসবাস সেখানে। ৬০ শতাংশ অবাঙালি হিন্দিভাষীর বসবাস ভবানীপুরে। এখানে বাঙালিরাই সংখ্যালঘু। ভারতে হিন্দিভাষী বলয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা নরেন্দ্র মোদী। ফলে বিধানসভা ভোটের ভুল সংশোধন করে এই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে অবাঙালি প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে। বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। উপনির্বাচন উপলক্ষে প্রিয়াঙ্কা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে সকাল-সন্ধ্যা প্রচারণা চালিয়েছেন। রাজ্যের বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে চষে ফেলেছেন গোটা ভবানীপুর, যার কাছে নন্দীগ্রামে পরাস্ত হয়েছিলেন মমতা।

তবে ভারতে অবাঙালিরা একটু ভোটবিমুখ। বাংলায় যত ভোট নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়, ভারতের আর কোনো রাজ্যে ভোট নিয়ে এতটা মাথাব্যথা নেই ভোটারদের। ফলে ভোটের দিনগুলোয় পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে শতকের হিসেবে খুব কম ভোটই পরে অবাঙালি রাজ্যগুলোয়। তবে ভবানীপুরে অবাঙালি ভোট যদি ঠিকঠাক পরে তাহলে প্রিয়াঙ্কার জয়ের সম্ভাবনা থাকছে।

অপরদিকে বামেদের প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস। তাকে নিয়ে খুব একটা হৈ চৈ নেই। তাই মূল লড়াই মমতা বনাম প্রিয়াঙ্কা হবে। একজন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের সুপ্রিমো অপরজন ভারতের শাসক দলের প্রার্থী। তবে বয়সে তরুণ প্রিয়াঙ্কার পরাজয়ে কারো কিছুই যাবে আসবে না। কিন্তু মমতার জয়ের ওপর নির্ভর করছে তৃণমূলের ভবিষ্যত। ভবানীপুর কাকে বেছে নেবে তা জানা যাবে ৩ অক্টোবর ভোটের ফল ঘোষণার দিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।