ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভারত

জাল ভোটের অভিযোগ মমতার, জয়ের আশাবাদ মোদীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২১
জাল ভোটের অভিযোগ মমতার, জয়ের আশাবাদ মোদীর

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে চার জেলার ৩০টি আসনে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট চলাকালে বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) রাজ্যে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

দক্ষিণ ২৪পরগনার জয়নগর থেকে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে দুইশোর বেশি আসন নিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসছে।

তিনি বলেন, মানুষ আমাদের দুই হাত তুলে আশীর্বাদ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের চারদিকে এখন বিজেপি আর বিজেপি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, দিদির তৃণমূলের ফুল আসলে রক্তক্ষরণের শূল। এই শূলে বাংলার মানুষের রক্ত লেগে আছে। এ বাংলায় আর রক্তের খেলা হতে দেবো না। আপনাকে এর সব হিসাব দিতে হবে। আমরা রক্তের খেলা চাই না। অত্যাচারের খেলা চাই না। ভ্রষ্টাচারের খেলা হতে দেবো না। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসছে।

মোদি বলেন, দিদি অনুপ্রবেশীদের বেশি ভালোবেসে ফেলেছেন, সে কারণে বাংলার ভাই-বোনেরা তার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ অন্যায় আর হতে দেবো না।

নন্দীগ্রামে এবার অন্যরকম ভোট। মমতার চেনা জমি হলেও প্রার্থী হিসেবে এই আসনে তিনি নতুন। এই আসনে প্রার্থিতার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে অস্থায়ী ঠিকানা গাড়েন। সকাল থেকে তিনি সেই ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে কন্ট্রোল রুমে বসে নন্দীগ্রামের সম্পূর্ণ ভোট পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এরপর বেলা দেড়টার পর হুইলচেয়ারে করে বাইরে বের হন। যে সব ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি তাদের ভোট দেওয়ার আবেদন করেন এলাকায় গিয়ে।

মমতাকে সামনে পেয়ে তৃণমূলপন্থীরা যেমন পথে নেমে পড়েন অপরদিকে, মমতাকে দেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বাঁধার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তারক্ষীরা মমতাকে সামাল দিতে একটি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে নিয়ে যান।

সেখানে বসেই মমতা বলেন, এখানকার ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোট হয়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নির্দেশেই এসব হয়েছে। সকাল থেকেই ৬৩ খানা অভিযোগ জমা পড়েছে আমার কাছে। আমি সব অভিযোগ নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। রাজ্যপালকেও জানিয়েছি। আমরা আদালতে যাব।

অপরদিকে মমতাকে পথে নামতে দেখে অশান্তি বাড়ে দুই পক্ষের। সম্মুখ সমরে সংঘর্ষ বাঁধার পরিস্থিতি তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনী সামাল দেয় পরিস্থিতি। প্রায় দুই ঘণ্টা বন্দী থাকার পরে নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মমতাকে বের করে আনে।

তারপরই মমতা বলেন, ভোটের দিন বাংলায় দেশের প্রধানমন্ত্রী। এটা কি নির্বাচনের বিধি ভঙ্গ নয়? এখানকার বিজেপি প্রার্থী গত রাত থেকে চূড়ান্ত অসভ্যতামি ও গুন্ডামি করেছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে। আমি নন্দীগ্রাম নিয়ে চিন্তিত নই। আমি চিন্তিত গণতন্ত্র নিয়ে। এরা ভোট নিয়ে চিটিংবাজি করেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নির্বাচনের কাজে লাগানো হয়েছে। সব জানিয়েছি নির্বাচন কমিশনকে। সব ঘটনা নিয়ে আদালতে যাবো।

এর আগে সকাল থেকেই নন্দীগ্রামে দুই দলের মধ্যে দফায় দফায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তৃণমূলের দাবি ৮০ শতাংশ বুথে তারা পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি। পোলিং এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে ভয় দেখিয়েছে বিজেপি।

নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এখানে তৃণমূল করার লোকই নেই তো এজেন্ট দেবে কী করে? গোটা এলাকায় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। বিজেপি জিতছে বলেই তিনি (মমতা) এসব বলছেন। এসব বলে নন্দীগ্রামের ভোটারদের অপমান করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।