ঢাকা, সোমবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পাঁচ রাজ্যে বিজেপিকে বাঁচাতে ভরসা মোদী ম্যাজিকে!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
পাঁচ রাজ্যে বিজেপিকে বাঁচাতে ভরসা মোদী ম্যাজিকে! নরেন্দ্র মোদী (ফাইল ছবি)

কলকাতা: দীপাবলির আলোর রশনাই শেষ হতেই ভারতে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে চলছে বিধানসভা ভোট অর্থাৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদের নির্বাচনের তোড়জোড়। ভোট হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরাম, দক্ষিণের তেলেঙ্গানা, পশ্চিমের রাজস্থান, মধ্যভারতের মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে। 

ভোটপর্ব শুরু হবে ১২ নভেম্বর ছত্তিশগড় থেকে। তবে মাওবাদীপ্রবণ অঞ্চল বলে নিরাপত্তার কারণে ছত্তিশগড়ে দুই দফায় ভোট হবে।

এ রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে ২০ নভেম্বর। মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামে ভোট হবে ২৮ নভেম্বর এবং রাজস্থান ও তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ৭ ডিসেম্বর। পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল ঘোষণা হবে একইদিনে অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বর। চলতি বছরের অক্টোবর মাসেই এমনই তফসিল ঘোষণা করেছিলো নির্বাচন কমিশন।
 
পরিসংখ্যান বলছে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন শুধু নিয়মমাফিক ভোট নয়, আগামী বছরের প্রথমদিকে লোকসভা ভোটের (জাতীয় নির্বাচন) আগে নরেন্দ্র মোদীর কাছে অস্তিত্বের লড়াই বা বলা যেতে পারে মোদীজীর একপ্রকার অগ্নিপরীক্ষা।  এর কারণ পাঁচ রাজ্যে ভোট হতে চলেছে যখন ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম সমস্ত রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে। ডলারের বিনিময়ে সর্বকালীন রেকর্ড পতন রুপির দামে। কৃষকদের ক্ষোভ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কর্মসংস্থান তলানিতে, বিক্ষিপ্ত সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা।  

শুধু তাই নয় ৫শ’ ও হাজারের নোট বাতিল করা হয়েছিলো সেই জাল নোট বন্ধতে অক্ষম, জিএসটি ট্যাক্স এখনও সেভাবে মনে ধরেনি সাধারণ মানুষের, রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে সরাসরি মোদীকেই দুর্নীতিতে বিদ্ধ করে চলেছেন রাহুল গান্ধী। এরকম একঝাঁক জাতীয় স্তরের সঙ্কটের পাশাপাশি আর কয়েকটি প্রবণতাও মোদীর বিজেপির কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।
 
মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে বিজেপির সরকার চলছে। ভারতে একের পর এক জনমত সমীক্ষা পূর্বাভাস দিচ্ছে, এই তিন রাজ্যে বিজেপির ফল খারাপ হতে পারে। তাছাড়া দেশে একের পর এক উপ-নির্বাচনে বিজেপির ফল সেরকম আশানুরূপ হয়নি।  

এছাড়া ২০১৪ সালের পর থেকে যতগুলো রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন (মুখ্যমন্ত্রী পদের নির্বাচন) হয়েছে তার বেশিরভাগই বিজেপি জিতেছে। কারণ সেসব রাজ্যে অবিজেপি দলের সরকার ছিল। এর বিপরীতে বিজেপি যেসব রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে।  

পাঞ্জাবে বিজেপি জোট হেরে গিয়েছে, গোয়ায় ভোটে শাসক বিজেপি হেরে গিয়েও সেখানে নির্দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়েছে ও গুজরাতে ক্ষমতায় থাকলেও বিজেপিকে বড়ো ধাক্কা দিয়ে কংগ্রেস অপ্রত্যাশিত ফল করেছে। ফলে এই প্রবণতা যদি আগামী ভোটগুলিতে বজায় থাকে তাহলে মোদীর জন্য এক ধরনের বিপদসঙ্কেত।
 
এছাড়া মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থান হলো হিন্দি বলয়ের ভরকেন্দ্র। এই তিন রাজ্য হাতছাড়া হওয়ার অর্থ বিজেপির কোর ভোটব্যাঙ্ক হাতছাড়া হওয়ার বার্তা। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান রাজ্যেই সরকারবিরোধী ইস্যুতে বিজেপি শাসিত সরকার যথেষ্ট কোণঠাসা। মধ্যপ্রদেশের ‘ব্যাপম’ কেলেঙ্কারির পর এই প্রথম ভোট হতে চলেছে।  

রাজস্থানে বিজেপির সমস্যা হলো স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা সিন্ধিয়াকে তার দলের একাংশই মেনে নিতে নারাজ। সুতরাং যাবতীয় অনিশ্চয়তার মোকাবিলা করে জয়ের ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা মোদী ম্যাজিক। তাই ভারতে অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন বিজেপি নয়, বিজেপিকে বাঁচাতে অগ্নিপরীক্ষা মোদীরই।

বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৮
ভিএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।