ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

কয়লাকাণ্ডে মমতার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীকে দিল্লি ডেকে পাঠালো ইডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
কয়লাকাণ্ডে মমতার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীকে দিল্লি ডেকে পাঠালো ইডি

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতির শেকড় কতদূর গড়িয়েছে তা খুঁজতেই হন্যে হয়ে তদন্ত চালাচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এবার সেই পরিস্থিতিতে অবৈধ কয়লা পাচার মামলায় পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে দিল্লিতে ডেকে পাঠালো এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

 

মলয়কে আগামী ২৯ মার্চ দিল্লিতে যেতে বলা হয়েছে। যদিও আইনমন্ত্রী বলছেন, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। কোনো চিঠিও পাননি।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) জানা গেছে, শুধু আইনমন্ত্রী নন, তার আপ্ত সহায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীকেও দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থাটি। আগামী ২৩ মার্চ ডেকে পাঠানো হয়েছে তার আপ্ত সহায়ককে।

খনি থেকে অবৈধভাবে কয়লা তোলার মামলায় এর আগেও আইমন্ত্রীর আসানসোলের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান পর্যন্ত চালিয়েছিল আরও একটি সংস্থা -সিবিআই। এমনকী তার কলকাতার ফ্ল্যাটেও হানা দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। এরপরই ইডি তাকে বেশ কয়েকবার কলকাতায় সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠালেও এড়িয়ে গেছেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মলয় ঘটক। এবার আরও একবার তাকে ডেকেছে ইডি। তবে কলকাতা নয়, একবারে দিল্লি। আগামী ২৯ মার্চ সেখানেই হাজিরা দিতে জানিয়েছে ইডি।

এই পাচারচক্রের সঙ্গে প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির যুক্ত থাকার প্রাথমিক প্রমাণও রয়েছে ইডি ও সিবিআইয়ের কাছে। ইতোমধ্যে কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় শত চেষ্টা করেও শেষমেশ তিহাড় জেল এড়াতে পারেননি একদা বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল তথা মমতার কেষ্ট। দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের নির্দেশে আপাতত তিহাড় জেলেই বন্দি রয়েছেন অনুব্রত। একই মামলায় গ্রেফতার হওয়ার কেষ্টর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনও বর্তমানে তিহাড় জেলেই বন্দি রয়েছেন।

অনুব্রত, সায়গল ছাড়াও কয়লা পাচারকাণ্ডে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তার ভিত্তিতেই পাওয়া তথ্য খতিয়ে দেখে আগেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল মলয়কে। বারবার তা উপেক্ষা করায় ২৯ মার্চ দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে আইনমন্ত্রীকে। তবে ইডি ডেকে পাঠালেও তিনি যাবেন কিনা এখনও তা স্পষ্ট নয়।

তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা এবং একনায়ক মনোভাবের বিরুদ্ধে আগামী ২৯ এবং ৩০ মার্চ ধরনায় বসতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৯ মার্চ দুপুর ১২টায় নয়াদিল্লির আম্বেদকারের মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসবেন। টানা দু’দিন অর্থাৎ ৩০ মার্চ পর্যন্ত‌ চলবে সেই ধরনা। ওই একই সময় আইনমন্ত্রীর হাজিরা দেওয়া কথা দিল্লিতে।

এর আগেও ২০১৯ সালে দেখা গিয়েছিল, সারদা ঘুষ কাণ্ডে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের সন্ধানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল যখন কলকাতায় হানা দিয়েছিল তখনও তার গ্রেফতার ঠেকাতে এসপ্ল্যানেডে ধরনা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবার গ্রেফতার তো দূরহস্ত পুরো ফোকাস ছিল মমতার উপরেই। এবারও ধরনায় বসতে চলেছেন মমতা। ফলে কি হয় সেদিকেই নজর থাকবে রাজ্যবাসীর। চলতি বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার পরেই ২৪ সালে আসন্ন লোকসভা ভোট। ফের একবার মমতা পুরনো বিরোধীনেত্রীর সত্ত্বায় নিজেকে তুলে ধরতে চাইছেন দল প্রধান। যা বাংলার রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad