ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

বড়মুড়া ঝরনায় এখন পর্যটকের ভিড়

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
বড়মুড়া ঝরনায় এখন পর্যটকের ভিড় বড়মুড়া ঝরনা

আগরতলা (ত্রিপুরা): সম্প্রতি প্রচারে আসা বড়মুড়া পাহাড়ের প্রাকৃতিক ঝরনা দেখতে প্রতিদিন ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় বাড়ছে। এখন থেকে প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর আগেও ত্রিপুরার ব্যাপক অংশের মানুষ জানতেন না যে রাজ্যের বড় প্রাকৃতিক ঝরনা রয়েছে।

এমনকি রাজ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পর্যটনের তালিকাতেও ঝরনার নাম উল্লেখ নেই। তবে গত প্রায় ৩ বছর আগে জঙ্গলে ঘুরতে যাওয়া একদল যুবক বড়মুড়া পাহাড়ের এই ঝরনাটি আবিষ্কার করেন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে এই ঝরনায় ভ্রমণপিপাসুদের যাতায়াত শুরু হয়।  

আগরতলা শহর থেকে মাত্র প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে হবে এই পাহাড়টি। সাবেক ৪৪ নম্বর ও বর্তমান ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে গেলে খোয়াই জেলার অন্তর্গত বড়মুড়া পাহাড়ের ইকোপার্কে যাওয়ার আগেই জাতীয় সড়ক থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে এই ঝরনাটি অবস্থিত।  

সম্প্রতি রাজ্য সরকার বড়মুড়া পাহাড়ের নাম পরিবর্তন করে রেখেছে ‘হতাইকতর’ তবে লোক মুখে এখনো বড়মুড়া নাম প্রচলিত রয়েছে। জাতীয় সড়ক থেকে ঝরনায় যাওয়ার রাস্তা এত দুর্গম, উঁচু-নিচু টিলা বেয়ে যেতে হয় ২ কিলোমিটার যেন মনে হয় ৫ কিলোমিটার। শেষের প্রায় ১ কিলোমিটার কোন রাস্তা নেই। ছড়া, পিচ্ছিল পাথরের ওপর হয়ে, ঘন জঙ্গল ও কাঁটা ঝুপের মধ্য দিয়ে পা ফেলার সামান্য জায়গা দিয়ে পৌঁছতে হয় ঝরনায়। তবে এই দুর্গম পথ ধরে চলার সময় ঝরনা দেখা না গেলেও ওপর থেকে ছিটিয়ে পড়া পানির শব্দ শোনা যায়।
মূল ঝরনায় গেলে দেখা যায় প্রায় ১৫ ফুট উঁচু থেকে আছড়ে পড়ছে শীতল পানি। এটি দেখতে এখন রোজ নতুন নতুন মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে। এখানে আসা অনেকের সঙ্গে বাংলানিউজের তরফে কথা বলা হয়, তাদের সবার বক্তব্য আগরতলা শহরের এত কাছে এমন সুন্দর মনোরম জায়গা রয়েছে তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তবে সবার একটাই ক্ষোভ রাজ্য সরকার একটু উদ্যোগী হলে শুধু ত্রিপুরা নয় অন্যান্য জায়গার পর্যটকরাও এই ঝরনা দেখতে ভিড় জমাতেন। তাদের অভিমত এডভেঞ্চার স্থানে আসার রাস্তা কিছুটা কঠিন হতে পারে, কিন্তু এত দুর্গম হলে দুর্ঘটনার ভয় থাকে। তাই পর্যটকদের আসার সুবিধার কথা চিন্তা করে পথটাকে আরও একটু চওড়া এবং যাতে কেউ পড়ে না যায় তার জন্য পথের দুই ধারে লোহার রেলিং লাগিয়ে দেওয়া যেতে পারে। যাতে করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ ঝরনায় আসতে পারে। এখন এই পিচ্ছিল পাথুরে পথে কেউ পা পিছলে পড়ে গেলে পরিণাম ভয়ানক হবে তা নিশ্চিত। রাজ্য সরকারের উদাসিনতায় এমন সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ থেক বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক মানুষ বলেও জানান এখানে বেড়াতে আসা ভ্রমণপ্রেমীরা।

একাধিক বার আসা দর্শনার্থীরা জানান, এই ঝরনার একটি ভালো দিক হলো অনেক ঝরনা শীতকালে শুকিয়ে যায়, কিন্তু এটাতে সারা বছর পানি থাকে। তাদের আরও দাবি প্রয়োজনে সরকার এখানে প্রবেশের জন্য টিকিট চালু করতে পারে, এর ফলে সরকারের রাজস্ব আসবে। এভাবে সরকার এর সংস্কারের অর্থ তোলে নিতে পারবে এবং নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে।
ত্রিপুরা সরকারের পর্যটন দপ্তরের মন্ত্রী প্রণজীৎ সিংহ রায় বলেন, সরকারিভাবে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে লোক মুখে ঝরনার বিষয়ে শুনেছেন। বাংলানিউজের কাছে শুনে তিনি এবার নিশ্চিত হয়েছেন। এই ঝরনাটি সরেজমিনে দেখা আসার জন্য খুব দ্রুত পর্যটন দপ্তরের একটি টিমকে পাঠাবেন। টিমটি ঘুরে এসো রিপোর্ট জমা করলে তিনি বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২০
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।