ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

আখাউড়া সীমান্ত বন্ধ, আগরতলায় কষ্টে দিনযাপন ৩ বাংলাদেশির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২০
আখাউড়া সীমান্ত বন্ধ, আগরতলায় কষ্টে দিনযাপন ৩ বাংলাদেশির আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বন্ধ থাকায় আগরতলায় আটকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিন বাংলাদেশি নাগরিক।

আগরতলা (ত্রিপুরা): আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট বন্ধ থাকায় আগরতলায় আটকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিন বাংলাদেশি নাগরিক। এ তিনজন হলেন সেলিনা আক্তার (৪২), মো. ফজলে রাব্বি (২৬) এবং মো. আসফাক উস সালেহিন (২২)।

মো. ফজলে রাব্বি সেলিনার আক্তারের ছেলে। ফজলে বাংলানিউজকে জানান, তিনি গত ১২ মার্চ মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে ভারতে আসেন।

কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মায়ের হার্টের বাইপাস সার্জারি করান। ৭ মে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলেও করোনা ভাইরাসের জেরে ভারতজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ায় তারা সেখানেই আটকে পড়েন।

পরে আন্তর্জাতিক রুটে প্লেন চলাচল শুরু হলে গত ৬ জুন আগরতলায় আসেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল, আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন ও নিজ বাড়ি কুমিল্লার মুরাদপুরে চলে যাবেন। কিন্তু আখাউড়া সীমান্তের ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের কর্মী ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) জওয়ানদের কয়েকজনের করোনা ভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়ায় তারা আগরতলায় আটকে আছেন। আগামী ১২ জুন পর্যন্ত আখাউড়া সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘ চার মাস বিদেশে থাকার কারণে তারা আর্থিক সংকটে পড়েছেন। এ অবস্থায় হোটেল খরচসহ অন্য খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, অনেক হোটেল মালিক তাদের প্রথমে জায়গা দিতে চাননি বলেও জানান। এরপর অনেক অনুরোধ করার পর একজন হোটেল মালিক তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

এ অবস্থায় তারা আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন অফিসে গিয়ে তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেন। সহকারী কমিশনের তরফে তাদের বলা হয়েছে ভারত সরকার যতদিন পর্যন্ত সীমান্ত না খুলে দেয়, ততদিন তাদের কিছু করার নেই। এ অবস্থায় তাদের অনুরোধ সরকার যেন দ্রুত তাদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে।

অপরদিকে সেলিনা আক্তার জানান, তিনি ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগী হওয়া সত্ত্বেও দিনে এক বেলা ভাত এবং বাকি দুই বেলা শুকনো চিড়া খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের কাছে তার একটিই আবেদন, তাদের যেন দ্রুত দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় উভয় দেশের সরকার। বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি তিনি।

তাদের সঙ্গে রাজধানী আগরতলার শকুন্তলা রোডের একটি বেসরকারি হোটেলে অপর একটি কক্ষে রয়েছেন বাংলাদেশের চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকার যুবক মো. আসফাক উস সালেহিন। তিনি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের আম্বলা শহরের একটি বেসরকারি কলেজে বি-টেক পড়ছেন। তিনি এবছরের জানুয়ারি মাসে ভারতে এসেছেন। লকডাউন শুরু হওয়ায় এতদিন দেশে যেতে পারেননি। সম্প্রতি ভারতে প্লেন চলাচল শুরু হওয়ায় তিনি দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। সে অনুযায়ী তিনি গত ৯ জুন আগরতলায় আসেন আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পরিকল্পনা নিয়ে। কিন্তু এখানে এসে জানতে পারেন, আখাউড়া সীমান্ত সাময়িক সময়ের জন্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই তিনি আর্থিক সমস্যায় পড়েছে। এ অবস্থায় তিনিও চাইছেন আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশন এবং বাংলাদেশ সরকার যাতে তাদের দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২০
এসসিএন/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।