ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আগরতলা

স্মার্টসিটি হচ্ছে আগরতলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
স্মার্টসিটি হচ্ছে আগরতলা শহরকে স্মার্টসিটিতে রূপান্তরিত করতে আগরতলায় কাজ চলছে। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): দেশের ১০০টি শহরকে স্মার্টসিটিতে রূপান্তরিত করার কাজ হাতে নিয়েছে ভারত সরকার। এরই অংশ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার পুরনিগম এলাকাটিও স্মার্টসিটির অধীনে আনা হয়েছে। তাই জনসাধারণের সুবিধার জন্য প্রকল্প রূপায়নের জন্য হাজার কোটি রুপি ধার্য করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৫ কোটি রুপির কাজ হয়েছে।

আগরতলা পুরনিগমের কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব বাংলানিউজকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান।

কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব জানান, ২৪০ কোটি রুপির প্রকল্পের কাজ চলছে।

বাকি রুপির প্রকল্পের কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। আবার কিছু কিছু প্রকল্পের কাজ শুরু অপেক্ষায় আছে। বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।  ছবি: বাংলানিউজআগরতলার ব্যস্ততম অংশে ৪৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা ও ২৩টি ট্রাফিক সিগন্যাল লাগানো হবে। যারা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করবেন তাদের চেহারা ও গাড়ির নাম্বার প্লেট চিহ্নিত হবে এই ক্যামেরায়। একইসঙ্গে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ট্রাফিক বিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে জরিমানার রসিদ তৈরি হবে এবং তা বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হবে। পাশাপাশি পুলিশ, আগরতলা পুরনিগমের সব গাড়ি এবং অ্যাম্বুলেন্স লোকেশন চিহ্নিত করা হবে জিপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে। এই কন্ট্রোল সেন্টার ১৫ ডিসেম্বর চালু করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

ডা. শৈলেশ কুমার যাদব জানান, গোটা শহরজুড়ে বিনামূল্যে ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা থাকবে। ৪০টি স্মার্ট বাসস্টপ তৈরি করা হচ্ছে। এতে ডিসপ্লেবোর্ড থাকবে। এই বোর্ডগুলোতে কখন কোন বাস আসবে ও কোথায় যাবে, পরবর্তী বাস কতক্ষণ পরে আসবে ও কোথায় যাবে তার বিবরণ প্রদর্শিত হবে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ২৬টি ডিজিটাল ডিসপ্লেবোর্ড লাগানো হচ্ছে। যেন রাজ্য ও আগরতলা শহরের বিভিন্ন তথ্য জানতে পারে মানুষ।   জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। ফলে অনলাইনে কর দিতে পারবে জনগণ। বৈদ্যুতিক তারশহরে ঘুরতে আসা পর্যটক যদি কোনো সমস্যায় পড়েন, তা সমাধানের জন্য কিছু কলবক্স লাগানো হবে। এই বক্স থেকে সাধারণ মানুষ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে তথ্য জানতে পারবে এবং কন্ট্রোল রুমে বসে থাকা ব্যক্তি তথ্য দিয়ে পথচারীকে সহায়তা করতে পারবে। এই ব্যবস্থা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এজন্য বর্হিঃরাজ্যের বেসরকারি সংস্থাকর্মীরা কন্ট্রোলরুমসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় দিনরাত কাজ করে চলছেন। এছাড়া আগরতলা পুরনিগমের সেন্ট্রালজোনে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার যে সমস্যা রয়েছে তার স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করা হয়েছে। জমে থাকা পানি দ্রুত পার্শ্ববর্তী নদীতে ফেলার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি পাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এই পাম্পগুলোর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনের মাধ্যমে দ্রুত জমে থাকা বৃষ্টির পানি নদীতে ফেলা হবে। এছাড়া আগরতলা শহরে যে ক’টি পুকুর রয়েছে এগুলোকে পুনরায় সংস্কার করা হবে।

শহরের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াটার এটিএম বুথ বসানো হয়েছে। ওয়াটার বুথগুলো থেকে মানুষ মাত্র এক রুপিতে এক লিটার করে বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে। একইসঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটি স্মার্ট শৌচালয় স্থাপন করা হচ্ছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে।

আগরতলা শহরের দু’টি মূল প্রবেশদ্বার হলো বাংলাদেশ থেকে আখাউড়া হয়ে শহরে প্রবেশপথ এবং অন্যটি মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দর থেকে শহরের প্রবেশপথ। এগুলোকে চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৪৪ কোটি রুপি ব্যয়ে আখাউড়া আগরতলা রাস্তার প্রশস্ত করার কাজ চলছে। .শহরের যানবাহন সমস্যা সমাধানের জন্য আগরতলা শহরের বটতলা এবং পুরাতন মোটরস্টান্ডে দুইটি মাল্টিস্টোরেজ কার পার্কিংসেন্টার তৈরি করা হবে। এগুলোর সঙ্গে থাকবে কর্মাশিয়াল কমপ্লেক্স ও শপিং কমপ্লেক্স।

পাশাপাশি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে স্মার্টসিটি করতে আরও ৫০০ কোটি রুপি ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এই অর্থে আগরতলার উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ এবং তার সামনের দু’টি লেকে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা করা হবে। প্রাসাদের উত্তর থেকে দক্ষিণ গেট পর্যন্ত পায়ে হাঁটার জন্য বিশেষ লেন তৈরি করা হবে। এর পাশে ত্রিপুরা ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী বিক্রির স্টল ও ফুডকোর্ট থাকবে। আগরতলা পুরনিগমের কমিশনার ডা. শৈলেশ কুমার যাদব । রাজ্যে ঐতিহ্যবাহী মহারাজ বীর বিক্রম কলেজের সামনে লেকটি ইকোট্যুরিজম প্লেস হিসেবে তৈরি করা হবে। এছাড়া শহরের সব বৈদ্যুতিক, টেলিফোন, ইন্টারনেটসহ অন্যান্য সব ক্যাবল ভূগর্ভস্থ একটি বিশেষ চ্যানেলের মধ্যে আনা হবে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে আগরতলা এক স্মার্ট শহরের রূপ পাবে যা রাজ্যবাসী ও পর্যটকের কাছে দৃষ্টিনন্দনীয় হবে বলে আশাবাদী ডা. শৈলেশ কুমার যাদব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।