ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

চা উৎপাদনে নজির গড়েছেন ত্রিপুরার ধন্যমানিক্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭
চা উৎপাদনে নজির গড়েছেন ত্রিপুরার ধন্যমানিক্য জৈব পদ্ধতিতে চা উৎপাদন

আগরতলা: রাসায়নিক পদ্ধতির চাষবাস থেকে মুখ ফিরিয়ে মানুষ এখন পুরোপুরি জৈব পদ্ধতির চাষবাসের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ভোক্তারাও পছন্দ করছেন জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিতদ শাক-সবজি। 

জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত চাষের সামগ্রীর প্রতি স্বচেতন মানুষের আগ্রহ দেখে ত্রিপুরার ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার ফটিকছড়া এলাকার একটি গোষ্ঠী সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে গ্রিন ও ব্ল্যাক টি তৈরি করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে সাফল্য পেতে শুরু করেছে জানান সহায়ক দলের সম্পাদক ধন্যমানিক্য দেববর্মা।

 

ধন্যমানিক্য বাংলানিউজকে জানান ২০১১ সালে ফটিকছড়া এলাকার কয়েকজন জনজাতি অংশের মানুষদের নিয়ে তিনি গড়ে তোলেন "ফটিকছড়া হামারী স্মল টি গ্রোয়ার সোসাইটি"। এই সোসাইটির সদস্যরা নিজেদের জায়গায় ছোট ছোট চা বাগান গড়ে তোলেন, চা গাছে তারা কোন রাসায়নিক সার ও বালাই নাশক ব্যবহার করেননি।  

চা উৎপাদনের নিয়ম অনুসারে বাগান তৈরির ৩ বছর পর অর্থাৎ ২০১৩ সাল থেকে চা গাছ থেকে পাতা তোলার কাজ শুরু হয়। তখন থেকে তারা সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ও হাতে কাঁচা পাতা তোলার কাজ থেকে শুরু করে চা পাতা প্রক্রিয়া করণের কাজ করছেন।

প্রথমে উৎপাদন খুব সামান্য হতো। তবে দিন দিন যেমন সোসাইটির সদস্য সংখ্যা বাড়ছে তেমনি উৎপাদনও অল্প অল্প করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে সোসাইটির সদস্য সংখ্যা ১০৬ জন ও তাদের ১০৬টি বাগান রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ৬০টি বাগান থেকে কাঁচা পাতা তোলা হচ্ছে। বাকি বাগান গুলো চা পাতা তোলার উপযুক্ত হয়নি। এবছর ২০কেজি গ্রিন টি উৎপাদিত হয়েছে। পাশাপাশি ব্ল্যাক টি উৎপাদন করা হয়। আর অবশিষ্ট কাঁচা চা পাতা ঊনকোটি জেলার জেলা সদর কৈলাশহরের একটি বড় বাগানে বিক্রি করা হয়।  
জৈব পদ্ধতিতে চা উৎপাদন ধন্যমানিক্য বাংলানিউজকে আরো জানান,  শুধুমাত্র কাঁচাপাতা শুকানোর কাজে একটি ড্রায়ার ব্যবহার করা হয় এছাড়া কোনো কাজে মেশিন ও প্রিজার্ভেটিবের ছুঁয়াও লাগেনা।  

জৈব পদ্ধতিতে চাষে উৎপাদন তুলনামূলক কম হয় ও খরচ রাসায়নিক সারের উৎপাদিত সামগ্রীর তুলনায় বেশি হয়। চা উৎপাদনের ক্ষেত্রে কি পার্থক্য আছে? এর উত্তরে ধন্যমাণিক্য জানান অন্য চাষের মত জৈব পদ্ধতিতে চা চাষেও উৎপাদন কম ও খরচ কিছু বেশি হয়। তবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে প্রতি কেজি গ্রিন টি তারা বিক্রি করছেন ১ হাজার রুপি ও ব্ল্যাক টি বিক্রি করছেন ৫০০ রুপি প্রতি কেজি।

আগরতলার শ্যামলি বাজারের জৈব পণ্যের ষ্টলে তাদের সম্পূর্ণ হাতে তৈরি দুই ধরণের চা পাতা পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানান।

জৈব পদ্ধতিতে চা চাষের পরিকল্পনা এলো কি করে, বাংলানিউজের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,  তার জীবনের বড় একটা সময় কাটিয়েছেন আসাম রাজ্যে। সেখানে থাকাকালীন সময়ে চা চাষ সংক্রান্ত বিষয়ে নানা তথ্য লাভ করেছেন ও এগুলোকে কাজে লাগিয়ে ত্রিপুরায় চা বাগান গড়ে তোলেছেন ও সফলতা লাভ করেছেন। তাদের এই চা চাষের সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। তাই তাদের এই চা বাগানসহ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখেছেন ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার পবিত্র করসহ আরো অনেক বিশিষ্ট জনেরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৭

এসসিএন/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।