ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

‘আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ উভয় দেশের সম্পর্ক মজবুত করবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২৩
‘আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ উভয় দেশের সম্পর্ক মজবুত করবে’

আগরতলা, (ত্রিপুরা): আগরতলা ও আখাউড়া রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে বুধবার (১ নভেম্বর)। দিল্লি থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

পাশাপাশি আগরতলার মহাকরণ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের যোগ দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। পরে একসঙ্গে বোতাম টিপে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথভাবে নির্মিত তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।  
এর মধ্যে দিয়ে আজ আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করা হলো। ওই প্রকল্পগুলো দেশের বাণিজ্যের পাশাপাশি মৈত্রী সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।  

পরে সংবাদ সম্মেলনে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা বলেন, রাজ্যের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন আজ। ভারত ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের মধ্যে নিশ্চিন্তপুর ও গঙ্গাসাগর রেলস্টেশনের মাধ্যমে রেলপথে যোগাযোগ স্থাপন ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি বলেন, এই রেলপথে যোগাযোগের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পরিবহন এবং পর্যটনের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা প্রবেশদ্বার হতে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় আগরতলা-আখাউড়া রেল যোগাযোগ স্থাপনের ফলে বর্তমানে আগরতলা-কলকাতা রেলপথের দূরত্ব ১৬০০ কিলোমিটার থেকে কমে ৫০০ কিলোমিটার হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই উত্তর পূর্বাঞ্চলসহ ত্রিপুরা যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘হীরা’ মডেলের (হাইওয়ে, ইন্টারনেটওয়েজ, রেলওয়ে  এবং এয়ারওয়েজ) প্রকৃত বাস্তবায়নের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘অমৃত ভারত স্টেশন স্কিমের’ অধীনে সারা দেশে ৫০৮টি রেলস্টেশনকে পুনঃউন্নয়নের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে জোনের ৯১টি রেলস্টেশনের উন্নয়নের জন্য এ প্রকল্পের অধীনে ৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।

ত্রিপুরা রাজ্যে তিনটি রেলস্টেশনকে ‘অমৃত ভারত স্টেশন স্কিমের আওতায় আনা হয়েছে। এগুলো, ধর্মনগর, কুমারঘাট এবং উদয়পুর রেলস্টেশন। এই তিনটি স্টেশনের উন্নতিকরণ এবং আধুনিকীকরণের জন্য ৯৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হবে।

তিনি বলেন, অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্পে তিনটি স্টেশনের উন্নয়ন ছাড়াও আগরতলা রেলস্টেশনকে ‘ওয়ার্ল্ড  ক্লাস  স্টেশন  স্কিমের’ আওতায় আন্তর্জাতিকমানের রেলস্টেশনে উন্নীত করার জন্য কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ২৩৫ কোটি ৪৫ লাখ রুপি।

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিজি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর ‘অ্যাক্ট ইষ্ট নীতি’র মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। নানাবিধ প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। বর্তমানে সার্বিক যোগাযোগের দিক থেকে ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্বাঞ্চল উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছে,যা স্বাধীনতার গত সাত দশকেও সম্ভব হয়নি।

বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা-সড়ক, রেল, জলপথ এবং বিমানপথের উন্নয়নের ফলে রাজ্যের মানুষ নানাভাবে এর সুফল পাচ্ছেন। এ সময় অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ অনেক বেড়েছে। রেল, সড়ক, বিমানপথ এবং জলপথে যোগাযোগ বাড়ার ফলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য বেড়েছে। শিল্প এবং পর্যটন ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ ঘটছে।

আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্প ২০১৬ সালে অনুমোদিত হয়। ২০১৭ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এটি আগরতলা রেলস্টেশনের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম বাংলাদেশ রেল নেটওয়ার্কের গঙ্গাসাগর স্টেশনে যুক্ত হলো বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এই প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য তিনি উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীদের ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।