ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

পর্যটন

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা দুর্গাসাগর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৯
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা দুর্গাসাগর দুর্গাসাগর। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা এলাকায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরা ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগর দিঘি। যেখানে বছরজুড়েই থাকে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের আনাগোনা।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেহ-মনে প্রশান্তি এনে দেবে। দিঘির চারপাশের গাছপালার  ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কখন, কোথায় মন যে হারিয়ে যাবে তা বুঝে ওঠাই কঠিন।

তারপর দিঘির জলে পা ভেজানোর আনন্দটা তো থাকছেই। সব মিলিয়ে ক্লান্তিহীন, শীতল আবহে যেনো মন জুড়িয়ে যায় এখানটায়।

এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের কাছে দিঘিটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে কাজ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বর্তমানে দুর্গাসাগরে ছয়টি হরিণ রয়েছে। দিঘির জলে ডানা ঝাপটে ভাসতে দেখা যাবে রাজা হাঁস ও পেচি হাঁস।  তবে ভাগ্য ভালো হলে ডাহুক ও পানকৌড়ির দেখাও মিলতে পারে দিঘির পাড়ে।

যদিও দিঘি কেন্দ্রীক পাখিদের আনাগোনা বাড়ানো জন্য সম্প্রতি কৃত্রিম ভাবে গাছে গাছে বসানো হয়েছে পাখির বাসা। কিন্তু হরহামেশা বিলুপ্ত প্রায় নানান পাখির ডাক শোনার পাশাপাশি দেখাও মেলে এখানে।

বরিশাল শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে বরিশাল-স্বরূপকাঠি আঞ্চলিক সড়কের পাশে বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামে ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগর দিঘির অবস্থান।  

বরিশাল নগরের নতুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বাস বা যাত্রীবাহী থ্রি-হুইলার (মাহিন্দ্রা)-এ চরে আধঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছানো যায় দুর্গাসাগর দিঘিটিতে।  

দুর্গাসাগরে আসা ভ্রমণকারীরা।  ছবি: বাংলানিউজএছাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হওয়ায় বাস বা থ্রি-হুইলার থেকে নামতেই দিঘির প্রবেশ পথের দেখা মিলবে। ১০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে প্রবেশ করে যতোটা সময় মন চায় থাকা যাবে দিঘির পাড়ে।

১৭৮০ খৃষ্টাব্দে চন্দ্রদ্বীপ পরগনার তৎকালীন রাজা শিব নারায়ণ এলাকাবাসীর পানির সংকট নিরসনে মাধবপাশায় একটি বৃহৎ দিঘি খনন করেন। মা দুর্গাদেবীর নামে দিঘিটির নামকরণ করা হয় দুর্গাসাগর। প্রত্নতত্ত্ব সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিবর্তে দুর্গাসাগর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে জেলা প্রশাসন। দুর্গাসাগরের তিন দিকে ঘাটলা ও দিঘির ঠিক মাঝখানে ৬০ শতাংশ ভূমির উপর টিলা।

দিঘির জলাভূমির আয়তন ২৭ একর। এর চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন বৃক্ষ শোভিত বন। সবমিলিয়ে দুর্গাসাগরের আয়তন ৪৫ দশমিক ৪২ একর। দিঘির মধ্যখানে রয়েছে গাছ-গাছালিতে ছায়া দৃষ্টিনন্দন একটি দ্বীপ। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন সরকারের উদ্যোগে দিঘিটি পুনরায় সংস্কার করা হয়।  

সম্পূর্ণ দিঘিটি উঁচু সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেড়া। দুই দিকে প্রবেশের জন্য দুইটি গেট থাকলেও একটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চৈত্রমাসের অষ্টমী তিথিতে হিন্দু ধর্মালম্বীরা এখানে স্নানের উদ্দেশে সমবেত হন।

দুর্গাসাগরের অদূরেই রয়েছে অত্যাধুনিক বায়তুল আমান জামে মসজিদ কমপ্লেক্স ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক জাদুঘর। এ জাদুঘরটি বানারীপাড়া উপজেলার চাখারে শেরেবাংলার জন্মভিটায় অবস্থিত।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭২০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১৯
এমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।