ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১

রোজার কাজা আদায়ের বিধান

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৯
রোজার কাজা আদায়ের বিধান ছবি : প্রতীকী

প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলমানের ওপর রমজানের রোজা রাখা ফরজ। অসুস্থতা কিংবা অন্য কোনো বড়সড় অপারগতার কারণে রোজা রাখতে না পারলে ইসলামে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ইচ্ছাকৃত রমজানের রোজা না রাখা মারাত্মক অপরাধ ও গুনাহের কাজ।

রমজানের একটি রোজা ছুটে গেলে অনেক কল্যাণ ও সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার নামান্তর। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি শরিয়তসম্মত কারণ বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভাঙে, তার ওই রোজার বিপরীতে সারা জীবনের রোজাও রমজানের একটি রোজার সমমর্যাদা ও স্থলাভিষিক্ত হবে না।

’ (তিরমিজি, হাদিস নং: ৭২৩)

তবে অসুস্থতা বা অন্য ওজর থাকলে ভিন্ন কথা। সে ক্ষেত্রে অন্যদিন পালনের সুযোগ রয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে (রমজানে) উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে ব্যক্তি অসুস্থ বা মুসাফির হয়, সে অন্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে, আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজটাই চান, কঠিন করতে চান না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)

রোজার কাজা আদায়ের বিধান
কোনো সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান ইচ্ছাকৃত রমজানের রোজা না রাখলে বা অনিচ্ছায় ভেঙে ফেললে অথবা কোনো ওজরের কারণে ভেঙে ফেললে পরে ওই রোজার কাজা ও কাফফারা আদায় করতে হবে।

মুসাফির ও অসুস্থ ব্যক্তি রোজা রাখতে কষ্ট হলে, অনুরূপ গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী যদি নিজের বা বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা করে, তাহলে রমজানে রোজা না রেখে পরে তা কাজা করে নিতে পারবে, এ ক্ষেত্রে কাফফারা দিতে হবে না। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫; তিরমিজি, হাদিস নং: ৭১৫)

রমজানের কাজা রোজার ব্যাপারে সব ইমাম একমত যে, কোনো ব্যক্তি যে কয়দিনের রোজা রাখতে পারেনি সে কয়দিনের রোজা কাযা করবে। দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী, ‘আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূর্ণ করবে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
 
এ দিনগুলোর ক্ষেত্রে লাগাতরভাবে রোজা রাখা ফরজ নয়। ইচ্ছা করলে লাগাতরভাবে রোজা রাখা যাবে। আবার ইচ্ছে করলে আলাদা আলাদাভাবেও রোজা রাখা যাবে। আপনার সাধ্যানুযায়ী প্রতি সপ্তাহে একদিন অথবা প্রতি মাসে একদিন রোজা রাখতে পারেন। এর দলিল হচ্ছে- পূর্বোক্ত আয়াত। এ আয়াতের মধ্যে কাজা পালনের ক্ষেত্রে লাগাতরভাবে রোজা রাখার কোনো শর্ত করা হয়নি। বরং শুধু যে কয়দিন রোজা ভঙ্গ করা হয়েছে সে সম সংখ্যক দিন রোজা রাখা ফরজ করা হয়েছে। (আল-মাজমু: ৬/১৬৭; আল-মুগনি ৪/৪০৮)

নারীর ঋতুস্রাব পরবর্তী কাজা আদায়
মাসিক ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসব পরবর্তী স্রাবের সময় রোজা রাখা জায়েজ নেই। তবে ওই দিনগুলোর রোজার কাজা দিতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।

রোজা রাখার পর দিনের বেলায় যদি কোনো নারীর মাসিক শুরু হয়, ওই নারীর জন্য খাওয়াদাওয়ার অনুমতি আছে। তবে লোকজনের সামনে না খেয়ে নির্জনে খাওয়াদাওয়া করবে। আর যে নারী মাসিকের কারণে রোজা রাখেনি, দিনের যে সময়ে তার রক্ত বন্ধ হবে, তখন থেকেই খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে রোজাদারের মতো দিনের অবশিষ্ট অংশ অতিবাহিত করবে এবং পরে ওই দিনের রোজা কাজা করে নেবে। (আল-লুবাব: ১/১৭৩)

নারীদের জন্য কৃত্রিম উপায়ে সাময়িক ঋতুস্রাব বন্ধ রাখা অনুচিত। এতে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। তা সত্ত্বেও এ পদ্ধতিতে ঋতুস্রাব বন্ধ থাকা অবস্থায় রোজা-নামাজ করলে তা আদায় হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া: ৬/৪০৪, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ৩/২৭৮)

রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘন্টা, মে ২১, ২০১৯
এমএমইউ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১ এর সর্বশেষ

welcome-ad