ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

গিনেস বুকে নাম লেখানো জুবায়েরকে সংবর্ধনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২০
গিনেস বুকে নাম লেখানো জুবায়েরকে সংবর্ধনা

বরিশাল: কাঁধের ওপর ফুটবল নাচিয়ে (ফ্রি স্টাইল ফুটবল) গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন রহমান জুবায়ের (২২)। গত ৩০ জুলাই দুপুরে ঝালকাঠি জেলা সদরের মসজিদ বাড়ি রোড এলাকার বাসিন্দা ও বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জুবায়েরের বাড়িতে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে একটি চিঠি আসে।

সেই খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং প্রচারিত হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক বরিশাল এস এম অজিয়র রহমানের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে বৃহস্পতিবার (০৬ আগস্ট) বিকেল ৩টায় জেলা বরিশালের অফিস কক্ষে আশিকুর রহমান জুবায়েরকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

এসময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান জেলা প্রশাসক বরিশাল এস এম অজিয়র রহমান। তাকে জেলা প্রশাসন ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে গিফট এবং নগদ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি প্রশান্ত কুমার রায়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর পরিচালক আলমগীর খান আলো, জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. হুসাইন আহম্মেদ, প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ, আশিকুর রহমান জুবায়ের ও তার বাবা জালাল আহম্মেদসহ আরও অনেকে।

পরে জুবায়ের তার ফুটবল নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, জুবায়েরকে ছোটবেলায় ফুটবলের নেশায় পেয়ে বসে। ফুটবল খেলে কিছু হতে হবে সেজন্য নয়, শুধুই ভালোবাসা থেকে চর্চা শুরু। শুরুতে ঘরের সামনের মাঠে ফুটবল খেলে কাটতো অবসর। ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হয় তা। আর এখন ফুটবল ছাড়া চলতেই পারেন না। পরিবারের চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট আশিকুর রহমান জুবায়ের। তার ফুটবলপ্রেম বিশেষ গুরুত্বও পায়নি পরিবারে। কথাগুলো বলছিলেন জুবায়ের। আবেগ ও উৎসাহে নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলেন না তিনি।  

গত ৩০ জুলাই দুপুরের পর থেকে জুবায়ের ফুটবল প্রেম আলোচিত হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। কারণ, ওইদিন নদীবেষ্টিত ঝালকাঠি জেলা শহরের মসজিদ বাড়ি রোডের বাসিন্দা ঠিকাদার জালাল আহম্মেদের বাড়িতে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে চিঠি আসে। সেই চিঠিটি ছিল আশিকুর রহমান জুবায়েরের বিশ্বজয়ের স্বীকৃতিপত্র। চিঠিতে লেখা, নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেস ক্যাটাগরিতে মিনিটে ৬৫ বার বল নিক্ষেপ ও ধরে ফেলে বিশ্ব রেকর্ড ভেঙেছেন বাংলাদেশের জুবায়ের। তারপর থেকেই অভিনন্দন বার্তায় ভাসছেন তিনি।

দক্ষিণাঞ্চলের অক্সফোর্ডখ্যাত সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। স্বপ্ন দেখেন, আরও বিশ্ব রেকর্ড গড়ার। ফুটবল খেলা ও ফুটবল নিয়ে কসরত আলাদা বিষয়। তার ফুটবল তারকা বা অনুপ্রেরণা হলেন ফুটবলবিশ্বের সুপারস্টার রোনালদিনহো। তার খেলা দেখে ফুটবলের প্রেমে পড়েন। তবে পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছেন ফুটবলের ফ্রি স্টাইল কসরতে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর জার্মানির মার্কেল গুর্ক (Marcel Gurk) যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেস ক্যাটাগরিতে মিনিটে ৬২ বার বল নিক্ষেপ ও ধরে ফেলে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। তার রেকর্ড ভেঙে মিনিটে ৬৫ বার নেক থ্রো অ্যান্ড ক্যাচেসে সফল হন জুবায়ের।  

গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস চেষ্টাসাধ্য কঠিন বিষয়। এজন্য নিয়মিত পরিশ্রম ও একনিষ্ঠ মনোযোগ দরকার। নতুন নতুন ইভেন্টে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ব রেকর্ড গড়বেন। তাতে শুধু ব্যক্তি সুনাম নয়, দেশের নাম ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে।

জুবায়ের বলেন, ‘আমি চাই আমার রেকর্ডটি নতুন কেউ ভাঙুক। তাতে করে দেশের ফুটবল সর্ম্পকে মানুষের আগ্রহ বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২০
এমএস/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।