ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

অনিশ্চিয়তার মুখে মাশরাফির বিশ্বকাপ

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১০
অনিশ্চিয়তার মুখে মাশরাফির বিশ্বকাপ

ঢাকা: নিয়তির কাছে ফের হেরে গেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। মঙ্গলবার আবাহনীর হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যাটিংয়ের সময় ডান হাঁটুতে চোট পান তিনি।

বিকেলে এপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় জাতীয় দলের এই পেসারকে। এমআরআই শেষে শৈল্যবিদ এবং হাঁটু বিশেষজ্ঞ এম আলীকে দেখানো হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে বিসিবির ফিজিশিয়ান মো. মনিরুল আমিন জানান,“চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে মাশরাফির ডান হাঁটুতে প্রতিস্থাপিত এসিএল লিগামেন্টের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ ছিড়ে গেছে। আমরা প্রতিবেদন অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক ডেভিড ইয়াং এর কাছে পাঠিয়েছি। তিনি প্রতিবেদন দেখে করণীয় সম্পর্কে জানাবেন। ”

এপোলে হাসপাতালের চিকিৎসক এম আলী জানিয়েছেন,“পেশিতে শক্তি সঞ্চয় করে হয়তো খেলতে পারবেন। সেজন্য কমকরে হলেও চার সপ্তাহ ওজন তুলতে হবে মাশরাফিকে। অস্ত্রোপচার দরকার হলে এরচেয়েও বেশি সময় পরিচর্যায় থাকতে হবে। ”

অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক ডেভিড ইয়াংয়ের পরামর্শ মেনে সিদ্ধান্ত নেবেন মাশরাফি। ডেভিডের সঙ্গে তার যোগাযোগও হয়েছে। মেলবোর্নের এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাশরাফিকে পরামর্শ দিয়েছেন, বুধবার সকালে সাইকিং করে চোট অনুধাবন করতে। এমআরআই প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে বাকি সিদ্ধান্ত দেবেন ডেভিড। ”

অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ ছিলো নড়াইল এক্সপ্রেসের। সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। এখনো স্বপ্ন দেখেন বিশ্বকাপে খেলবেন। অনুমান করছেন হাঁটুতে বড় কোন সমস্যা হয়নি। সুস্থ হয়ে শিগগিরই মাঠে ফিরতে পারবেন। কিন্তু মাশরাফির ফেরা অত সহজ হবে না।

২০০৯ সালের আগস্টে দুই হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের সময় অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডেভিড জানিয়েছিলেন, এরপর হাঁটুতে চোট পেলে আজীবনের জন্য খেলা থেকে ছিটকে পড়তে হবে। জোর করে খেলতে গেলে হাঁটুর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।

অতএব মাশরাফি চাইলেও বিশ্বকাপে খেলা প্রায় অনিশ্চিত। বিসিবিও চাইবে না চোট আক্রান্ত মাশরাফিকে স্কোয়াডে জায়গা দিতে। এতে জাতীয় দল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এখন ভাগ্যের ওপর নির্ভর করতে হবে সাবেক অধিনায়ককে।

মাশরাফির ডান হাঁটুতে অন্তত তিনবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। সর্বশেষ ২০০৯ সালের আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অস্ত্রোপচার হয়। প্রায় একবছর পরিচর্যা শেষে খেলায় ফেরেন। শ্রীলঙ্কায় এশিয়ান গেমস এবং ইংল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড সফরে নেতৃত্ব দেন। ঢাকায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে গোড়ালিতে আঘাত পেলে সিরিজের বাকি ম্যাচ খেলা হয়নি। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সিরিজে ফর্ম ফিরে পান দেশের শীর্ষ পেস বোলার। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী ম্যাচেও দারুণ খেলেছেন। বিধিবাম পরের ম্যাচেই অঘটনের শিকার।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপক্ষে আবাহনীর নেতৃত্ব দিচ্ছেলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। বিকেএসপি মাঠে নন স্ট্রাইকিং ব্যাটসম্যান হিসেবে রান নিতে গিয়ে আচমকা হাঁটু ঘুড়ে মাঠে লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

আঘাতের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন মাশরাফি। দুপুরে ফোন করতেই কাতর কন্ঠে জানান,“ভাগ্য খারাপ। আবারও ব্যাথা পেয়েছি। হাঁটু ঘুরে গেছে। ”

গলা ধরে আসছিলো নড়াইল এক্সপ্রেসের। এরচেয়ে বেশি কিছু বলতে পারেননি। চোটের কাছে বারবার স্বপ্নের অপমৃত্যুতে কতই বা মন শক্ত রাখা যায়। মাশরাফিও পারেননি।

ক্রিকেটে পা রাখার পর থেকে চোট তার নিত্য সঙ্গী। সুস্থ থেকে টানা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব কম সময়ই খেলতে পেরেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘন্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।