কক্সবাজার: সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মঙ্গলবার নেপালের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের জন্য ম্যাচটি শুধু ফাইনালে ওঠার লড়াই-ই নয়, প্রতিশোধেরও।
কক্সবাজার জেলা স্টেডিয়ামে নেপাল ও বাংলাদেশের ম্যাচটি হবে স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায়।
ফেব্র“য়ারিতে ঢাকা এসএ গেমসে নেপালের কাছে ০-১ গোলে হেরেছিলো বাংলাদেশ। সেই হারের শোধ নিতে সুযোগটা কাজে লাগাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তৃষ্ণা, সাবিনা, অম্রাচিং, সুইনু, মাইনুরা। তবে দুদলের মধ্যে পার্থক্য কিন্তু গতিতে। শেষ পর্যন্ত এটাই হয়তো ফাইনালে ওঠার বড় নির্ণয়ক হয়ে দাঁড়াবে।
এনিয়ে কোচ গোলাম রব্বানি ছোটনও চিন্তিত। সেকারণে খেলার আগের দিন দুপুরে অনুশীলন করান। শুধু গাগরমের অনুশীলন ছিলো না। বল প্র্যাকটিসও হয়েছে। প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ট্যাকটিসও দেখান ছোটন।
পরিচিত পরিবেশ, সমর্থক, মাঠ, স্বাগতিক হিসাবে কিছুটা হলেও এগিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ চারের লড়াইয়ে এটাই চাপ হয়ে উঠতে পারে। ভারতের কাছে বড় হারের তেতোস্বাদটাও ভূলে যাওয়া সহজ নয়। তবে কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন আশাবাদী,“অতীত নিয়ে ভাবতে চাই না। টুর্নামেন্টে ল্য ছিলো সেমিফাইনাল খেলা। এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখছি। মেয়েরাও উজ্জীবিত। সেরাটা দিতে পারলে নেপালকে হারানো অসম্ভব নয়। ”
প্রতিপ সম্পর্কে কোচের মন্তব্য,‘‘নেপাল উন্নতি করেছে ঠিকই। কিন্তু এখনও ওদের সঙ্গে আমাদের ব্যবধানটা বেশি নয়। ওদের হারানোর সামর্থ আমাদের রয়েছে। ”
তবে বাস্তবতার আলোকে নেপালকে হারানো কতটা সম্ভব সেটা দেখার বিষয়। কারণ, টুর্নামেন্টে আগের ম্যাচগুলোর পারফরমেন্সের ভিত্তিতে ভারতের পরই নেপালের অবস্থান। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে তারাও করেছে ৩১ গোল। এখনো কোনো প্রতিপক্ষই তাদের কাছে পাত্তা পায়নি। প্রতি ম্যাচেই পারফরমেন্সের উন্নতি করেছেন যমুনা, অনু লামারা। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ৬-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরু করে তারা। পরের দুই ম্যাচে যথাক্রমে আফগানিস্তানকে (১৩-০) ও পাকিস্তানকে (১২-০) গোল বন্যায় ভাসায় নেপালি মেয়েরা।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে বড় ব্যবধানে জয় পেলেও বাংলাদেশকে নিয়ে আলাদা করে ভাবছেন নেপাল কোচ ধ্রুব বাহাদুর,“বাংলাদেশ ভালো দল। স্বাগতিক হিসাবে কিছুটা তো এগিয়ে থাকবেই। ওদের বেশ কয়েকজন ভালো ফুটবলারও রয়েছে। তবে একটা পরিকল্পনা তো থাকবেই। কিন্তু এসব নিয়ে ভাবছি না। মেয়েরা নিজেদের খেলাটা খেললেই হবে। ”
অধিনায়ক যমুনা গুরংও বললেন প্রতিপকে নিয়ে নির্ভাবনায় থাকার কথা। বলেন,‘‘কে কেমন খেলছে তা নিযে ভাবা আমাদের কাজ নয়, কোচের। আমরা শুধু খেলবো। ”
বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের না ভাবার কারণও রয়েছে। তাদের দলে আছে অনুলামার মতো অসাধারণ এক স্ট্রাইকার। প্রতিযোগিতায় তিন ম্যাচে দশ গোল করে প্রমাণ করেছেন প্রতিপক্ষের জন্য কতটা ভয়ংকর তিনি। অধিনায়ক যমুনাও কম যান না। তিন ম্যাচে আট গোল দিয়েছেন।
অতএব প্রতিপক্ষ শিবিরে হানা দেওয়ার পাশাপাশি অনু ও যমুনাকে আটকাতে না পারলে স্বাগতিকদের ফাইনালে যাওয়া স্বপ্নেই থেকে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘন্টা, ২০ ডিসেম্বর, ২০১০