ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

খেলা

অজেয় নেদারল্যান্ডস ৩২ বছর পর ফাইনালে

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১০
অজেয় নেদারল্যান্ডস ৩২ বছর পর ফাইনালে

কেপটাউন: সেমিফাইনালে উরুগুয়েকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের ফাইনালে অজেয় নেদারল্যান্ডস। ৩২ বছর পর তৃতীয়বারের মতো এ যোগ্যতা অর্জন করে তারা।

এর আগে ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ সালে ফাইনাল খেললেও শিরোপা জেতা হয়নি ডাচদের।

উরুগুয়ের বিদায়ের মধ্য দিয়ে শেষ হলো লাতিনদের দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযান। এতে ২০০৬ সালের মতো এবারও বিশ্বকাপে ইউরোপময় ফাইনাল দেখবে ফুটবল অনুরাগীরা।  

মঙ্গলবার গ্রিন পয়েন্ট স্টেডিয়ামে নেদারল্যান্ডসের পক্ষে গিওভান্নি ফন ব্রঙ্কহোর্স্ট, ওয়েসলি স্নাইডার ও আরিয়েন রোবেন একটি করে গোল করেন। উরুগুয়ের পক্ষে গোল দু’টি করেন দিয়েগো ফরলান ও মেক্সিমিলিয়ানো পেরেইরা।

শুরু থেকেই চাপিয়ে খেলে অপ্রতিরোধ্য নেদারল্যান্ডস। খেলার ১২ মিনিটে গোল পোস্টে শট নেন ওয়েসলি স্নাইডার। যদিও বল গন্তব্যে পৌঁছায়নি। বরং পাল্টা আক্রমণে ডাচদের চেপে ধরার চেষ্টা করে উরুগুয়ে। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়রা উল্টো সুবিধা আদায় করে নেয়।

খেলার ১৭ মিনিটে গিওভান্নি ফন ব্রঙ্কহোর্স্টের গোলে ১-০’তে এগিয়ে যায় কমলা বাহিনী। ডেমি ডি জিওভের বাড়িয়ে দেওয়া বল বাঁ পায়ের জোড়ালো শটে নিশানা ভেদ করেন গিওভান্নি।

খুব বেশি সময় গোল ধরে রাখা সম্ভব হয়নি ডাচদের পক্ষে। বিরতির পাঁচ মিনিট আগে দিয়েগো ফরলানের গোলে সমতায় ফেরে দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।

ঝটিকা আক্রমণ। নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়রা ভাবতেও পারেনি এত দ্রুত ম্যাচের চরিত্র বদলে দেবে উরুগুয়ে। মাঝ মাঠের একটু ওপরে থেকে ওয়াল্টার গার্গানোর বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে একাই এগিয়ে যান ফরলান। ডাচ ডিফেন্ডারদের কাছে বাঁধা পড়ার আগে ৩৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের আচমকা শটে পরাস্ত করেন গোলরক্ষক মার্টিন স্টেকলেনবার্গকে। অবশ্য বল তাঁর হাতে ছুঁয়ে গেছে।

বিরিতির পর ভিন্ন মেজাজে মাঠে ফেরে দুই প্রতিপক্ষ। একে অন্যকে ছাড়িয়ে যেতে পাল্লা দেয় সমানে। খেলার ৫১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ সুযোগ এসেছিলো লাতিনদের সামনে। এডিনসন ক্যাভানি গোলমুখে হানা দিলে তাঁকে বাঁধা দিতে এগিয়ে যান ডাচ গোলরক্ষক। ফিরতি বল পেয়ে বাম প্রান্ত থেকে গোলে কিক নেন আলভারো পেরেইরা। কিন্তু হেডে বল বাইরে পাঠান নেদারল্যান্ডসের গিওভান্নি ফন ব্রঙ্কহোর্স্ট। গোল উপহার দেওয়ার পর দলকে বিপদের হাত থেকেও বাঁচান এই ডিফেন্ডার।

ধীরেই গুছিয়ে ওঠে নেদারল্যান্ডস। ৬৯ মিনিটে ২-১ গোলে এগিয়ে যায়। রবিন ফন পার্সির যোগান দেওয়া বলে গোলটি করেন ওয়েসলি স্নাইডার।

মাত্র সাড়ে তিন মিনিটের ব্যবধানে আরো একটি গোল হজম করতে হয় লাতিন দেশটিকে। ঝটিকা আক্রমণে ডির্ক কুয়েটের ক্রস থেকে হেডে বল জালে জড়ান আরিয়েন রোবেন।

তখনো যথেষ্ট সময়। কিন্তু গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছিলো না উরুগুয়ে। অন্যভাবে বললে ডাচরাই সুযোগ দেয়নি লাতিনদের। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে ইনজুরি সময়ের প্রথম মিনিটে ব্যবধান ৩-২ করেন মেক্সিমিলিয়ানো পেরেইরা।

ততক্ষণে মিটি মিটি হাসছে টিউলিপ ফুল। দেখতে দেখতে অতিরিক্ত চার মিনিটও পেরিয়ে যায়। শেষ বাঁশি বাজে। উচ্ছ্বাসে ফেটে পরে কমলা বাহিনী। তিন যুগের বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান ঘটায় বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ হওয়াটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু উরুগুয়ের ভাগ্য ঝুলে গেলো অন্তত আরো চার বছর। ৬০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটনোর মোক্ষম সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে গেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির। সেই ১৯৫০ সালে দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতেছিলো উরুগুয়ে। এরপর আর ফাইনাল খেলা হয়নি প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলটির। ৪০ বছর আগে ১৯৭০ সালে সেমিফাইনাল থেকে এভাবেই বিদায় নিতে হয়েছিলো ব্রাজিলের কাছে ৩-১ গোলে হেরে।  

বাংলাদেশ সময়: ০২১৯ ঘন্টা, জুলাই ০৭, ২০১০ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।