গুয়াংজু: প্রেস বক্স থেকে ভারতীয় সাংবাদিকরা সামনে গালাগাল দিয়ে গেলেন গেরহার্ট পিটার রাককে। অতিভদ্রদের মুখ থেকে বেরিয়েছে ভারতের হকি ডুবিয়েছে, এবার বাংলাদেশেরটাও ডোবাবে।
সত্যমিথ্যা যাচাই করা গেলো না। তবে জার্মান কোচের প্রশিক্ষণে বাংলাদেশর হকির তেমন উন্নতি হয়নি বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। ছন্নছাড়া খেলার কারণ ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে গেরহার্ট একহাত নিলেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মামুন উর রশিদকে। সঙ্গে ফেডারেশনের কর্মকর্তাদেরকেও বিষদগার করেছেন।
গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে দলের সঙ্গে আসা ম্যানেজার এবং সহকারী কোচসহ অন্যরা তখন লজ্জায় মুখ লোকাতে চলে যান খেলোয়াড়দের পিছু পিছু। গেরহার্ট বলেন,“এই দলটা আমি বাছাই করিনি। নির্বাচকরা যাকে তাকে দলে নিয়েছে। অভিজ্ঞতা নেই। খেলতে জানে না এমন খেলোয়াড়ে ভরা। ”
পাল্টা প্রশ্ন হলো জাপানের বিপক্ষে ম্যাচের পারফরমেন্স নিয়েও কী আপনি অসন্তুষ্ট। আচমকা এমন প্রশ্নে হতভম্ব হয়ে যান জাতীয় দলের কোচ। ইতোস্ত বোধ করেন খানিক সময়। এরপর বলেন জাপানের বিপক্ষে অসাধারণ খেলেছে ছেলেরা। কিন্তু এই ম্যাচে কেন যেন পারলো না। ”
অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অভাব ভালোই টের পেয়েছে বাংলাদেশ। বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের বয়স কম হওয়ায় ভয়ে সবকিছু গুলিয়ে ফেলেছন। কিন্তু কোচ গেরহার্ট সিনিয়রদের দলে নেওয়ার পক্ষে নন। তার মতে,“সিনিয়ররা আসবে কেন। যার পারফরমেন্স ভালো তারাই খেলবে। ”
অধিনায়ক জাহিদ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অভাব ভালোই অনুভব করেছেন। বলেন,“এখনো খেলা শেখেনি এমন খেলোয়াড় দলে নেওয়া হয়েছে। এখানে ইসা ভাই, তুহিন ভাই এবং টিটু ভাইদের মতো কয়েকজন থাকলে ভারত এভাবে খেলতে পারতো না। গেরহার্টই ডুবিয়ে দিচ্ছে। এই একবছর দেখার পর আমার মনে হয়েছে তিনি হকি খেলেননি এবং হকি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। ”
অন-অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের দলে নেওয়ায় রাসেল মাহমুদ জিমিও বিরক্ত। তার দৃষ্টিতে,“আমরা ১০ জন খেলোয়াড় নিয়ে খেলছি। হকিতে ১১ জন টানা খেলতে পারে না। বিশ্রাম দিয়ে দিয়ে খেলাতে হয়। কিন্তু আমাদের বদলি খেলোয়াড়রা মাঠে দাঁড়াতেই পারে না। ”
অভিজ্ঞতা থাকলেও মাকসুদুল আলম হাবুল এবং মোশররফ হোসেন কুটির ফর্ম হারিয়েছেন। হোসনে মোবারক হাঁটুতে চোট পেয়েছেন সোমবারে জাপানের বিপক্ষে। লিগামেন্ট এবং তরুনাস্থি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাঁটুতে অস্ত্রোপচার লাগবে বলে জানিয়েছেন গেমসের চিকিৎসকরা। জিমি বুধবার ভারতের বিপক্ষে খেলার শেষ সময়য়ে কাঁধের বাঁদিকে চোট পেয়েছেন। পরিস্থিতি সামলে নিয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে একাদশ সাজানোই কঠিন হয়ে যাবে বাংলাদেশ কোচের জন্য।
বৃহস্পতিবার হংকংকে কাছে হেরে গেলে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং নেমে যাবে অনেক পেছনে। কারণ পরের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানো অসম্ভব ব্যাপার। যদিও কোচ হংকংকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদী। বলেন,“জিমি না খেলতে পারলে একটু সমস্যা হবে। তারপরেও ম্যাচ জিতবো আমরা। ”
এশিয়ান গেমসে সবগুলো ম্যাচ হারলে বাংলাদেশের কি হবে জানতে চাইলে গেরহার্ট বলেন,“আমি এশিয়ান গেমসের পর কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দেবো। ”
গুয়াংজু সময়: ১৭৩০ ঘন্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১০