ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বাংলাদেশকে গোলবন্যায় ভাসালো ভারত

সেকান্দার আলী, গুয়াংজু থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১০
বাংলাদেশকে গোলবন্যায় ভাসালো ভারত

গুয়াংজু: ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়ার অবস্থা। আক্রমণ থামাতে ভয়।

বল ধরতে গেলে ভয়। গোল করতে ভয়। এত ভয় থাকলে খেলা হয়! বাংলাদেশ আসলে খেলেনি। ভারত বাংলাদেশকে নিয়ে খেলেছে। হাঁপুর হুঁপুর ৯ গোল দিয়ে জিমি, চয়নদের লজ্জা দিয়েছে।

কোচ গেরহার্ট পিটার রাক অবশ্য লজ্জা পাননি। উল্টো বেশি বেশি গোল হজমের পথ দেখিয়েছেন শীষ্যদের। এমনটাই চেয়েছিলো ভারত। কোন গোল খেতে হয়নি। বরং দুই হালি একটা গোল উৎসব হয়েছে। সেমিফাইনালের টিকিট পেতে গোলগুলো কাজে দেবে।

অটি’র হকি স্টেডিয়ামে চীনারা সমর্থন দিতে এসেছিলো বাংলাদেশকে। ‘জেগে উঠো মুঞ্জালা (বাংলাদেশ)। জেগে ওঠো মঞ্জালা। ’ অনেকটা সময়ধরে স্লোগান দিয়ে গেলো। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ঘুম ভাঙ্গেনি। একের পর এক গোল খেলে বোধহয় অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায়।

মাত্র একমিনিট খেলা ধরে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম গোল হজম করতে হয়। হলপ্পার বানিয়ে দেওয়া বল গোলে পাঠান খন্দকার তুষার। শুরুতেই শত্রুপক্ষের কোমড় ভেঙ্গে দেওয়ার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে সুবিধা হয় ভারতের খেলোয়াড়দের জন্য। পালা করে আক্রমণ দিয়ে তছনছ করে বাংলাদেশের রক্ষণ শিবির।

১১ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে ২-০ তে এগিয়ে যায় সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। জাহিদ হোসেন গোলপোস্টের ডানদিকটা ফাঁকা রাখায় হালকা পুশে নিশানা ভেদ করেন সন্দিপ সিং। ২২ মিনিটে গিয়ে ব্যবধান ৩-০ হয়। রবি পালের পাস থেকে সুভেন্দ্রা সিং গোললাইনের ভেতরে বল রেখে আসেন।

প্রথমার্ধের বাকি ১৩ মিনিটে কোন গোল হয়নি। অনেক চেষ্টা করেও ভারত প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠাতে পারেনি। অবশ্য পুরো সময়টা খেলা হয়েছে বাংলাদেশের ২৫ গজে। জিমি, বিপ্লব, নান্নুরা আক্রমণ থামাতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভারতের খেলোয়াড়রা বল নিজেদের হাত ছাড়া করেননি। সবাইকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে জাহিদ হোসেন একাই গোলবার আগলে রাখার যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সফলও হন।

বিরতির পর ৯ মিনিটে আরো তিন গোল হজম করতে হয় বাংলাদেশকে। রাজ পাল, তুষার এবং সন্দিপ লক্ষ্যভেদ করেন। ৬-০ তে পিছিয়ে পড়ার পর গোল পেতে মরিয়া হয়ে উঠে বাংলাদেশ। কোচের কথা মেনে রক্ষণভাগ থেকে রাসেল মাহমুদ জিমি, ইমরান হাসান পিন্টু এবং মশিউর রহমান বিপ্লব আক্রমণে যান। সুযোগে শেষ তিন গোল আদায় করে নেয় ভারত। যার মধ্যে সন্দিপ পেনাল্টি কর্ণার থেকে এবং তুষার ফিল্ড গোল করেন। নয় গোলের চারটি সন্দিপের, তিনিটি তুষারের স্টিক থেকে এসেছে।

বানের মতো গোল করে যাচ্ছে ভারত। অথচ কোচ গেরহার্ট খেলোয়াড়দের উসকে দিয়েছেন একটি গোল করার জন্য। একবারের জন্যও মিডফিল্ডি এবং আক্রমণভাগ সাজাতে পারেননি জার্মান কোচ।

পুরো ৭০ মিনিটে দু’বার গোলের সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। ফরোয়ার্ড পুস্কার খিসা বলের দখল নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত খেলা হলো ভারত বনাম অধিনায়ক জাহিদের। দূরদর্শন টেলিভিশন এবং ভারতীয় বেতারের আকাশ বাণীর বিশেষজ্ঞ কমেন্টটররা অনেকবারই এই মন্তব্য করেছেন। ভারতীয় দলের কাছ থেকেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন জাহিদ। একাধারে অন্তত ১০ থেকে ১২টি নিশ্চিত গোলের বল বিপদমুক্ত করেছেন।

গুয়াংজু সময়: ১৬১৫ ঘন্টা নভেম্বর ১৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।