ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

বাংলাদেশের কাছে পাত্তা পেলো না হংকং

সেকান্দার আলী, গুয়াংজু থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১০
বাংলাদেশের কাছে পাত্তা পেলো না হংকং

গুয়াংজু: অচেনা হংকং নিয়ে যত ভয় ছিলো বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটারদের। একটি সহজ জয় তা দূর করে দিয়েছে।

হংকংকে ১০ উইকেটে গুঁড়িয়ে দিয়েছে সালমা বাহিনী।

অসাধারণ ক্রিকেট খেলে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে, তেমন কিছু নয়। হংকংয়ের দুর্বলতাই জয়ের পথ সুগম করে দিয়েছে সালমাদের। ২৫ রানে অল-আউট হয় হংকং। উইকেট শিকার করতে বোলারদের খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি। বরং প্রতিপক্ষ একটু বুদ্ধি খাটালে বিপদ হতো চামেলি খাতুনদের।

ধৈর্য্য দেখাতে পারেনি হংকংয়ের মেয়েরা। একের পর এক রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেছে। বাংলাদেশের দুই বোলার চামেলি খাতুন ৩ ওভারে ৪ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন। তিথি রানী সরকার ২ ওভারে ৪ রান দিয়ে পেয়েছেন একটি উইকেট। বাংলাদেশ বাকি সাতজনকে ফিরিয়েছে ফিল্ডিং দিয়ে। অর্থাৎ রান আউট হয়েছেন। অবশ্য ২০ ওভারে ম্যাচে ১৭.১ ওভার পর্যন্ত বোলিং করতে হয়েছে বাংলাদেশেকে।

জয়ের জন্য কষ্ট করতে হয়নি সালমাদের। ২৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ফারজানা হক পিঙ্কি একাই তুলেছেন ১৭। ৮ রান এসেছে অতিরিক্ত। একরান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন আহমেদ রুমানা।

খেলার আগে হংকংকে নিয়ে বাংলাদেশের কোচ দিপু রায় চৌধুরী এবং খেলোয়াড়রা দারুণ গল্প ফেদে ছিলেন। ‘অচেনা হংকং, কোন ধারণা নেই। ’ খেলা শেষে জানাগেলো অন্যকথা। দুই বছর আগে যাদের সঙ্গে একদিনের ক্রিকেট খেলেছিলো, এশিয়ান গেমসেও সেই পুরনোরাই খেলতে এসেছেন। নতুনমুখ হাতে গোনা দু’একজন।

তবুও অচেনা বলে রব তোলার কারণ জানতে অধিনায়ক সালমা খাতুনকে প্রশ্ন করা হলে বলেন,“আসলে হংকং যে আগের দল নিয়েই খেলবে সেবিষয়ে কোন তথ্য আমাদের জানা ছিলো না। তাই অনেক ভয়ে ছিলাম আমরা। ভেবেছিলাম বিদেশি ক্রিকেটারদের নাগরিকত্ব দিয়ে খেলাবে। ”

সালমা খাতুনের ধারণ একেবারে অমূলক নয়। হংকং দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই ভারত অথবা পাকিস্তানের। নিজেদের বলে দেশটির তেমন কিছু নেই। কিন্তু যারা খেলেছেন তাদের কেউই পেশাদার নন। অবসর হলেই ক্রিকেট খেলতে আসেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত গিল কেনু সোজা বলে দিলেন হংকংয়ে বাংলাদেশের মতো ক্রিকেট হয় না। এই খেলাকে কখনোই পেশা হিসেবে ভাবতে পারিনা। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। লেখাপড়া শেষে অন্যপেশায় যোগ দেব। ”

অথচ হংকংয়ের বিপক্ষে এই জয়কে ঐতিহাসিক বিজয় বলে ঘোষণা দেন বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার। এমন কথাও বলেন,“এই জয়কে কেউ ভালোভাবে না নিলে তাদেরকে অন্যভাবে দেখতে হবে। ”

ক্রীড়ামন্ত্রী ক্রিকেট দলের এই জয়ে যতটা উচ্ছ্বসিত, ক্রিকেটারদের তেমন আবেগ ছুঁতে পারেনি। আহাদ আলীর আবেগ দেখে অনেকেই এক সঙ্গে বলে উঠেন,“ স্যার মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছি। শিরোপা না জিতলে কেমন হয়। ” এর উত্তরে মন্ত্রী বলেন,“এইটা অনেক বড় জয়। আনন্দ কর!

মন্ত্রীর কথা মতো নাচতে লেগে যাননি ক্রিকেটাররা। বরং শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরার অদম্য বাসনা কাজ করছে সবার মনে। আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক সালমা খাতুন বলেন,“আমার মনে হয় না ফাইনাল খেলতে আর কোন সমস্যা হবে। আশা করি শিরোপা নিয়েই দেশে ফিরতে পারবো। ”

কোচ দিপু রায়ও মনে করেন সাফল্য পাবে তার দল। বলেন,“আমরা গত তিন মাস অনেক পরিশ্রম করেছি। আমার বিশ্বাস শিরোপা জিততে পারবে মেয়েরা। ”  

গুয়াংগং ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার জাপানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।

গুয়াংজু সময়: ১৯৫৪ ঘন্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।