ঢাকা: ‘গেমস ভিলেজে বোমা পেতে রাখা হয়েছে’- অজ্ঞাত টেলিফোন থেকে এ ধরনের হুঁশিয়ারিতে বোমাতঙ্কে জবুথবু হয়ে গিয়েছিলো দিল্লির পুরো কমনওয়েলথ গেমস (সিডব্লিইজি) ভিলেজ। গত মঙ্গলবার দুপুরে ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ওই টেলিফোন কল পাওয়ার পর রীতিমত হুলস্থূল পড়ে যায় সাড়ে ৬৩ একর জুড়ে বিস্তৃত পুরো গেমস ভিলেজে।
পিটিআই, এপি, দিল্লি গেমস কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ওয়েবসাইটসহ অন্যান্য সংবাদ সংস্থা জানায়, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও আয়োজক ভারতসহ অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের প্রায় ৭ হাজার অ্যাথলেট ও কর্মকর্তায় ভরপুর পুরো গেমস ভিলেজের ১৪ টি ব্লক ও ৩৪টি টাওয়ারের মোট ১১৬৮টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্টে বোমা নিস্ক্রিয়কারী দল, ডগ স্কোয়াডসহ বিশেষ গোয়েন্দা দল বুধবার সারা বিকেল জুড়ে তল্লাশি চালায়। তবে শেষ পর্যন্ত বোমা বা বিপজ্জনক কোনও ডিভাইসের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গেমস ভিলেজে অবস্থানকারী সাংবাদিকরা জানান, বোমা পেতে রাখার গুজব শুরু হওয়ার পর থেকে তল্লাশি অভিযান চলা পর্যন্ত ভিলেজ থেকে কাউকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া না হলেও সবার মাঝে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বোঝা যায়, বোমা পেতে রাখার ওই খবরটি ছিল ভূয়া। নিছক তামাশা করার জন্য, বা গেমস আয়োজকদের বিভ্রান্ত করার জন্যই এ কাজ করেছে কেউ।
তবে স্বাভাবিক কারণেই সিডব্লিইজি -এর নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো বোমা পেতে রাখার খবরটিকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক তৎপরত চালায়।
দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র রাজন ভগত মিডিয়াকে জানান, পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে হিন্দিভাষী এক ব্যক্তি জানায় যে গেমস ভিলেজে বোমা পেতে রাখা হয়েছে। তৎক্ষণাৎ বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড পুরো এলাকায় নাশকতা বিরোধী (অ্যান্টি স্যাবোটাজ) অপারেশন চালায়।
গেমস ভিলেজের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রগতি ময়দান ও প্রধান তথ্যকেন্দ্রসহ পুরো এলাকায় টানা দুই ঘন্টাব্যাপী চালানো অভিযান শেষে প্রমাণ হয়, বোমা পেতে রাখার খবরটি মিথ্যা ছিলো।
এদিকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে বোমার গুজব ছড়ানো অপরাধীকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পূর্ব দিল্লির কল্যাণপুরী এলাকার এক বস্তিবাসী ওই ব্যক্তি ১৭ বছর বয়সী এক টিনএজার।
একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ওই কিশোরকে আটক করা হয়েছে। তাকে বাতিকগ্রস্থ খেয়ালি প্রকৃতির বলে মনে হয়েছে। সে তার কয়েকজন বন্ধুকে ঝামেলায় ফেলতেই এ কাণ্ড ঘটায় যা শেষ পর্যন্ত তাকেই ঝামেলায় ফেলে দিয়েছে।
তবে ওই কিশোরের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দিল্লির কমনওয়েল্থ গেম্স ভিলেজের নিরাপত্তায় প্রায় ১ লাখ পুলিশ ও প্যারামিলিটারি বাহিনীর সদস্য দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কঠোর নিরাপত্তার চালুনিতে পর্যবেক্ষণ করছেন সেখানকার প্রতিটি স্থান ও খুঁটিনাটি বিষয়। কর্তৃপক্ষের অগোচরে এবং বিনা অনুমতিতে সেখানে অনাহুত কারও ঢুকে পড়া বা কিছু ঘটানো এক কথায় অসম্ভব বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১০