ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

খেলা

বাংলাদেশে কুপোকাত নিউজিল্যান্ড

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১০
বাংলাদেশে কুপোকাত নিউজিল্যান্ড

ঢাকা: টান টান উত্তেজনার ম্যাচে ৯ রানে জয় পেলো বাংলাদেশ। সাকিবের অল-রাউন্ড পারফরমেন্স।

নাঈম, নাজমুলের দুর্দান্ত বোলিং আর ১১ জনের আঁটসাঁট ফিল্ডিংয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্বাগতিকরা।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই বছর আগে জাতিকে এমনই এক জয় উপহার দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। ২০০৮ সালে সেবার জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। এবারও পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় এসেছে। একদিনের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮ ম্যাচে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় জয়।

বাংলাদেশ: ২২৮ (৪৯.৩ ওভার)
নিউজিল্যান্ড: ২০০/৮ (৩৭ ওভার ডিএল ম্যাথড)

দিনের শুরু দেখে শেষটা মেলানো কঠিন। শেষটা ছিলো বর্ণীল। শরতের বিকেলে উচ্ছ্বাসের ডামাঢোলে একাকার। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিজয়ের হাওয়া গায়ে মেখে বাঙ্গালীর ঘুরে বেড়ানোর ক্ষণ।

সাফল্যের পালকে আচড় কাটতে পারেনি সকালের ব্যাটিং দৈন্যতা। নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাটিং করতে পারেনি মাশরাফি বাহিনী। তিন বল বাকি থাকতেই শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন অধিনায়ক। নেতার ব্যাট থেকে এসেছে ১৫ রান।

শাহরিয়ার নাফিস এবং ইমরুল কায়েসের উদ্বোধনী জুটি শুরুটা ভালো করেছিলো। ছন্দপতন ঘটে ইমরুলের বিদায়ে। ৩২ বলে ১৬ রান নিয়ে কাইল মিলসের শিকার হন তিনি।

তামিম ইকবালের জায়গায় খেলতে আসা শাহরিয়ার নাফিস চেষ্টা করেন রানের গতি বাড়াতে। প্রায় আড়াই বছর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ড্যানিয়েল ভেট্টোরির বলে সরাসরি বোল্ড হন নাফিস।    

এরপর রকিবুল হাসান ২১, জুনায়েদ সিদ্দিকী ৩০ এবং মুশফিকুর রহিম ২২ রান করে ফিরে যান। উইকেটে তখনো দাপট দেখাচ্ছিলেন কাউন্টি ক্রিকেট খেলা সাকিব আল হাসান। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় রানের গতি মন্থর হয়ে আসে। লোয়ার মিডল-অর্ডার এবং টেলেন্ডে ব্যাটসম্যানরা দুই অঙ্কের কোটায় পৌঁছাতে পারেননি।

ইনিংসের পুরোটা জুড়েই বর্ণিল হয়ে থাকলেন সাকিব। কাইল মিলসের কাছে বোল্ড হওয়ার আগে ৫১ বলে ৫৮ রান করেন বাঁহাতি অল-রাউন্ডার। ৮টি চারের মার দিয়ে নিজের ইনিংসটি সাজান।

কাইল মিলস ৩টি, ম্যাককেই, ভেট্টোরি ও রাইডার দুইটি করে উইকেট নেন।

পেশাদার ক্রিকেটারদের জন্য ২২৯ রানের লক্ষ্য বড় কিছু নয়। আত্মবিশ্বাসের পারদ ছড়িয়ে দাপুটে শুরুও করে নিউজিল্যান্ড। ভয়ে কাঁপন ধরার উপক্রম হয় বাংলাদেশ শিবিরে।

জেসি রাইডার ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কাছে নাজমুল হোসেন যখন বেধরক পিটুনি খাচ্ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা তখন মাঠের বাইরে। ভঙ্গুর বোলিং লাইন নিয়ে কিউইদের থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন সাকিব আল হাসান। স্পিন নির্ভর হয়ে পড়ায় প্রতিপক্ষের লাগাম টেনে ধরা কঠিন হয়ে ওঠে। হুহু করে রান বাড়তে থাকে নিউজিল্যান্ডের খেরো খাতায়।
৫৩ রানে গিয়ে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। জেসি রাইডারকে সাজঘরে ফেরান সাকিব। ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও হাতের কারুকাজ দেখান ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ অল-রাউন্ডার।

সাকিবের সঙ্গে তাল মেলান আব্দুর রাজ্জাক। উইকেটে স্থির হওয়ার আগেই বিজে ওয়াটলিংকে বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার। নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহে তখন ২ উইকেটে ৭২ রান। এরপর ম্যাককালাম ও গ্র্যান্ট এলিয়টের উইকেট শিকার করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনেন বাঁহাতি স্পিন জাদুকর।

অল-রাউন্ডার এলিয়ট রানের খাতা খুলতে না পারলেও ম্যাককালাম ৪৫ বলে ৬১ রানের যোগান দিয়েছেন। ৭টি চার ও ২টি ছয়ের মার ছিলো তার ইনিংসে।

১৫ ওভারের শেষে বৃষ্টি হানা দেয় খেলায়। ৫৫ মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। সময় স্বল্পতার কারণে ১৩ ওভার কম খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন আম্পায়াররা। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে হিসেব কষে ৩৭ ওভারে ২১০ রানের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয় কিউইদের।

খেলা অনেকটাই স্বাগতিকদের অনুকূলে হেলে। কিছুটা চাপে পড়ে সফরকারীরা। সুযোগে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি (২৪ রান) এবং রস টেলরকে সাজঘরে ফেরান নাঈম। শেন স্টুয়ার্ট (২ রান) রান আউট হলে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

৩৫ ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ১৮৯ রান। জয়ের জন্য ১২ বলে প্রয়োজন হয় ২১ রান। টান টান উত্তেজনা মুহূর্তে ৩৬ ওভারে বোলিংয়ে আসেন সাকিব। লক্ষ্যে পৌঁছাতে মরিয়া হয়ে ওঠে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু তিন রানের বেশি খরচ করেননি সাকিব।

শেষ ওভারে ১৮ রান তুলতে হতো নিউজিল্যান্ডকে। টেনশন মুহূর্তে নার্ভ শক্ত রাখেন পেসার নাজমুল হোসেন। নিয়ন্ত্রিত বোলিং দিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখেন। ৩৭তম ওভারে ৯ রানের বেশি তুলতে পারেননি কাইল মিলস এবং টিম সাউদি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘন্টা, অক্টোবার ০৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।