বরিশাল: বরিশাল নগরীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ কবে জবাইয়ের আগে গরুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি নগরীর কসাইরা।
রংপুরে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী ও অসুস্থ গরুর মাংসে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এ খবর জানার পর নগরবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবার প্রশ্ন নগরময় গরু জবাই দেওয়ার আগে কেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। কোনো সমস্যা হলেই তখন কেন এসব বিষয় নিয়ে কথা হবে। গরু জবাইয়ের আগে ভেটেরেনারি সার্জনের উপস্থিত থাকতে হবে। এ জন্য তো ভেটেরেনারি সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রয়েছেন। যারা রয়েছেন, তাদের ব্যর্থতার দায় কে নেবে। তাদের বিরুদ্ধেও কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড বাজারের প্রবীণ কসাই মো. জালাল বলেন, গত ৫০ বছর ধরে তিনি কসাইয়ের কাজ করেন। আগে জবাইয়ের পূর্বে একটি সনদ দিয়ে গরুর শরীরে সিল দেওয়া হতো। সর্বশেষ কবে দিয়েছে মনে নেই।
তিনি বলেন, নগরীতে একটি কসাইখানা ছিল। এখন সেটাও নেই। বর্তমানে নগরীতে দৈনিক ২০/২২টি গরু জবাই দেওয়া হয়। কসাইরা নিজেদের ইচ্ছেমতো জবাই দেন।
বরিশাল নগর ভবনের সাবেক এক স্বাস্থ্য পরিদর্শক বলেন, নগরীর নতুন বাজারে একটি স্লাটার হাউস রয়েছে। সেটা ব্যবহার উপযোগী নয়। নগর ভবনের ভেটেরেনারি সার্জন রয়েছে। তিনি কখনো বাজারে গিয়ে পশু জবাইয়ের আগে কিংবা পরে গিয়ে দেখেছেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। নগরীর নথুল্লাবাদ, নতুন বাজার, বাজার রোড, পোর্ট রোড বাজার, বটতলা বাজার, বাংলা বাজার, সাগরদী বাজারসহ ছোট বড় সব বাজারে প্রতিদিন অনেক গরু জবাই দেওয়া হয়। নোংরা পরিবেশে গরু জবাই দেওয়াসহ মাংস কাটা হয়। স্বাস্থ্যসম্মত কোনো পরিবেশে কোনো কসাইয়ের দোকানে নেই।
নগরীর বাসিন্দা জাকির হোসেন ও গোলাম রাব্বানীসহ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, গরু রোগাক্রান্ত কিনা। গরু না মহিষ জবাই দিয়েছে সেই বিষয়ে কিছুই জানি না। কসাইয়ের কথার ওপর বিশ্বাস করে ও বাধ্য হয়ে মাংস কিনতে হচ্ছে।
নগর ভবনের ভেটেরেনারি সার্জন ডা. রবিউল ইসলাম বলেন, এটা সত্য যে নগরীতে কোনো কসাইখানা নেই। তাই গরু জবাইয়ের আগে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। বিগত সময়ের মেয়রসহ বর্তমান প্রশাসককেও বিষয়টি অবহিত করেছি। একটা কসাইখানা জরুরি। কিন্তু বাজেট না থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এমএস/আরআইএস