ময়মনসিংহ: গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৭) ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি প্রায় পাঁচ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি চৌরাস্তা এলাকায় নিজস্ব ওষুধ ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সরেজমিনে নিহত তুহিনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাটিপাড়া মৌলভীবাড়ী গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
নিহত তুহিনের বাবা হাসান জামাল ছেলের মৃত্যুতে আহাজারি করে বলেন, আমার ছেলে একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করত। শুনেছি সে ওষুধ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিল। তবে সে সাংবাদিকতা করত কি না, তা জানি না। এখন শুনছি সে সাংবাদিকতাও করত।
তুহিনের ভাগনে আবু রায়হান বলেন, মামা (তুহিন) ক্লিনিক ও ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকতা করতেন। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। আমরা তার খুনিদের ফাঁসি চাই।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে তুহিন সাংবাদিকতায় জড়িত ছিলেন বলে জানান, তার বাল্যবন্ধু মো. আজিজুর রহমান।
তিনি বলেন, গাজীপুরে স্ত্রী মুক্তা বেগম ও দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন তুহিন। বড় ছেলের বয়স সাত বছর, ছোট ছেলের বয়স তিন বছর। তিনি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন এবং একটি ক্লিনিক পরিচালনার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। পাশাপাশি সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তিনি বন্ধুবৎসল মানুষ ছিলেন।
আজিজুর রহমান আরও বলেন, শুনেছি ঘটনার আগে তুহিন একজনকে মারধরের একটি ভিডিও ধারণ করেছিলেন। মূলত সেই ঘটনার জের ধরেই সন্ত্রাসীরা তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা তার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
নিহত তুহিন ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া মৌলভীবাড়ীর বাসিন্দা হাসান জামাল ও সাহাবিয়া খাতুন বকুল দম্পতির ছয় সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তিনি স্থানীয় আল হেরা একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে মাধ্যমিক এবং সিলেট কোম্পানিগঞ্জের এম সাইফুর রহমান কলেজ থেকে ২০০৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। এরপর গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
তুহিনের বড় ভাই মো. সেলিম মিয়া মোবাইলফোনে জানান, বাদ জুমা গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় সাংবাদিক তুহিনের প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। সেখান থেকে গ্রামের বাড়িতে লাশ নিয়ে এসে বাদ মাগরিব দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এসআরএস