ঢাকা, সোমবার, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২, ১৪ জুলাই ২০২৫, ১৮ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

আমতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলার চেষ্টা, আহত ২-আটক ২ জন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:১৪, জুলাই ১৩, ২০২৫
আমতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলার চেষ্টা, আহত ২-আটক ২ জন বরগুনার মানচিত্র

বরগুনার আমতলীতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লাঠি, হকি স্টিক ও ধারালো রামদা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের ওপর হামলার চেষ্টার ঘটনায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে যুবদল নেতা ও ইউপি সদস্য ফিরোজ খান তাপসসহ দু’জনকে আটক করেছে নৌবাহিনীর সদস্যরা।

রোববার (১৩ জুলাই) সকালে আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা দায়িত্ব পালনের জন্য ইউপি কার্যালয়ে যান। তখন পরিষদ প্রাঙ্গণে প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ সেবা নিতে অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক সে সময় যুবদল নেতা ও প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ফিরোজ খান তাপস ৩০-৪০ জন অনুসারী নিয়ে সেখানে হাজির হন।

অভিযুক্তদের হাতে ছিল ককটেল, দা, হকি স্টিক ও লাঠি। তারা ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে চেয়ারম্যানের কক্ষে ঢুকে হামলার চেষ্টা চালায়। এ সময় ইউপি সদস্য সোহেল খান (৪০) এবং চেয়ারম্যানের ভাই জসিম মৃধা (৫০) তাকে রক্ষা করতে গেলে তাদের ওপরও হামলা হয়। দুজনকেই ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।

পরে খবর পেয়ে নৌবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফিরোজ খান তাপস ও তার সহযোগী রাসেল আকনকে আটক করে। তবে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ঘটনার সময় তাপসের স্ত্রী খাদিজা বেগমের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অনুসারী ইউপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে ইট-পাটকেল ছোড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।

আহত ইউপি সদস্য সোহেল খান বর্তমানে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। জসিম মৃধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সেবা নিতে আসা স্থানীয় গৃহবধূ বিউটি বলেন, বাপরে! হঠাৎ ম্যালা লোক আইসা বোমা ফাটাইলো, দা, লাঠি লইয়া হামলা শুরু কইরা দিল। আমরা দেইখাই পালাইছি।

আরেক স্থানীয় বাসিন্দা মো. বশির খান বলেন, পুলিশ আর নৌবাহিনী না আইলে আইজ চেয়ারম্যানরে মাইরা ফালাইত। ভয়ানক অবস্থা অইছিল।

চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা বলেন, ১৯ জুন এক চায়ের দোকানে বসে ফিরোজ খান তাপস নিজেই দরখাস্ত লিখে এনে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বুঝে নেয়। সেই দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে আজ আমি অফিসে গেলে সে আমাকে খুন করতে আসে।

অন্যদিকে অভিযুক্ত ফিরোজ খান তাপস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। এটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঘটনার পরপরই আমতলীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান, আমতলী-তালতলী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম মাসুদ, নৌবাহিনীর কমান্ডার মো. আরাফাত এবং আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. আমির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ওসি তদন্ত মো. আমির হোসেন বলেন, নৌবাহিনী সদস্যরা ফিরোজ খান তাপসসহ দুজনকে আটক করেছে। এখনো তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়নি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।