ঢাকা, রবিবার, ১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুন ২০২৫, ১৮ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

জমেনি যশোরের চামড়ার বাজার, ব্যাংক বন্ধের প্রভাব বলছেন ব্যবসায়ীরা

সরোয়ার হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০২, জুন ১৪, ২০২৫
জমেনি যশোরের চামড়ার বাজার, ব্যাংক বন্ধের প্রভাব বলছেন ব্যবসায়ীরা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাট

যশোর: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তম চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাটে জমে ওঠেনি ঈদ পরবর্তী চামড়ার বাজার।

ঈদের পরবর্তী শনিবার (১৪ জুন) দ্বিতীয় হাটেও বড় ক্রেতারা আসেননি।

ফলে হাটে পর্যাপ্ত চামড়া উপস্থিত থাকলেও আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।

ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, ঈদের পর টানা ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকায় বাইরের বড় বেপারীরা হাটে আসতে পারেননি। ফলে হাটে ক্রেতার সংখ্যা ছিল অত্যন্ত কম। নগদ অর্থের সংকটে স্থানীয় ক্রেতারাও চামড়া কিনতে আগ্রহ দেখাননি।

রাজারহাট চামড়া মোকামের বড় ব্যবসায়ী হাসিব চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, শনিবার (৭ জুন) ঈদের পর মঙ্গলবার (১০ জুন) ছিল চামড়ার প্রথম হাট। তবে ওইদিন প্রত্যাশিত চামড়া বা ক্রেতা—কোনোটিই দেখা যায়নি। প্রত্যাশা ছিল শনিবার (১৪ জুন) চামড়ার দ্বিতীয় হাট জমবে। হাটে প্রায় ২৫ হাজার চামড়াও ওঠে, কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় সেগুলোও বিক্রি হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক না খোলায় ঢাকাসহ আশপাশের ব্যবসায়ীরা হাটে আসেননি। ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকেও কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

খুলনার বটিয়াঘাটা থেকে আসা ব্যবসায়ী সাধন কুমার জানান, তিনি ২০০টি গরুর চামড়া এনেছিলেন। এর মধ্যে মাত্র ৫০টি ৭০০–৮০০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। তার দাবি, ব্যবসায়ীরা ‘এ’ গ্রেডের চামড়ার প্রতি বেশি আগ্রহী, অথচ বাজারে সেই মানের চামড়া খুব কম।

ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হাটে ‘এ’ গ্রেডের চামড়া ৯০০–১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এই মানের চামড়ার সংখ্যা খুবই কম।

তিনি আরও বলেন, আগামী শনিবার (২১ জুন) চামড়ার তৃতীয় হাটের দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর কোনো উপায় নেই।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় অনেক কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। চামড়া মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০০–৯০০ টাকায়, যেখানে খরচসহ সংগ্রহ মূল্যই এর চেয়ে বেশি।

ছাগলের চামড়া কিনতে যেখানে ৪০–৫০ টাকা খরচ হয়েছে, সেখানে তা হাটে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০–২০ টাকায়। তবে ছাগলের ভালো মানের চামড়া ৬০–৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে জানান তারা (খুচরা ব্যবসায়ীরা)।

রাজারহাট চামড়া মোকামের ইজারাদার খুরশিদ আলম বাবু বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংক বন্ধ থাকায় চামড়া বেচাকেনায় বড় প্রভাব পড়েছে। অনেক ব্যবসায়ী এখনও আড়ত থেকে চামড়া বের করেননি।

তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর আশঙ্কা, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এবং ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক না হলে তারা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।