খুলনায় এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায়নি। অনেকেই পানির দরে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
সরকার এবছর কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বাড়ালেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন বাজারে দেখা যায়নি। বিশেষ করে গরুর কাঁচা চামড়া আগের মতোই কম দামে কেনাবেচা হচ্ছে। আর অন্যান্য বছরের মতো এবারও ছাগলের চামড়ার প্রতি আগ্রহ দেখাননি অধিকাংশ আড়তদার, যা নিয়ে চামড়া বিক্রেতারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
রোববার (৮ জুন) দুপুরে শেখপাড়া চামড়া পট্টির কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, এবার ৮০ ভাগ ব্যবসায়ী চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা, লবণের দাম বাড়া এবং ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে অর্থ না পাওয়ায় চামড়া কেনেননি। গরুর চামড়া কেউ কেউ কিনলেও ছাগলের চামড়া একেবারেই কিনছেন না।
চামড়ার এমন দরপতনে হতাশা জানিয়েছেন বিভিন্ন ইয়াতিমখানা, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ বিক্রেতারা।
লবনচরা এলাকার মাদানীনগর মাদরাসার শিক্ষক হাসান ইমাম বাংলানিউজকে বলেন, সরকার চামড়ার মূল্য বাড়িয়েছে শুনে আশা করেছিলাম এবার ভালো দাম পাব। কিন্তু বাস্তবে পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।
হাফেজ শফিকুল ইসলাম নামে এক মাদরাসা শিক্ষক বলেন, ছোট গরুর চামড়া ১৫০-২০০ টাকা এবং বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শেখপাড়ার চামড়া পট্টিতে বিক্রির জন্য বেশ কয়েকটি চামড়া নিয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে অবশেষে পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।
চামড়া ব্যবসায়ী ভুট্টু সরকার বলেন, খুলনায় এবার সরকারের নির্ধারিত দামে কোনো চামড়া কেনাবেচা হয়নি। বাজারে চামড়ার দাম নেই। বেশি দামে কিনে বিক্রিতে লাভ হবে না, সেই আশঙ্কায় ছোট চামড়া ১৫০-২০০ এবং বড় চামড়া ৪০০ টাকায় কেনা হয়েছে।
খুলনা জেলা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম ঢালী বাংলানিউজকে বলেন, সত্যিই বলছি, পানির দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে। খুলনার ৮০ ভাগ ব্যবসায়ী এবার চামড়া কেনেননি। কেনার উপায়ও নেই—চামড়া সংরক্ষণের কোনো মার্কেট নেই, রাস্তায় রাখলে পুলিশ বাধা দেয়, আর লবণের দাম এত বেশি যে সংরক্ষণে লাভ হয় না। এ কারণেই ছাগলের চামড়া কেউ কিনছে না। কোরবানির মৌসুমে সরকার দাম বাড়ায়, পরে ট্যানারি মালিকরা দাম কমিয়ে দেয়। এতে চামড়ার বাজারে লস গুনতে হয়।
এমআরএম/এসআরএস