ফেনী: ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া সংলগ্ন মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ও আনন্দপুর ইউনিয়নের খিলপাড়া এলাকার সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে দক্ষিণ বরইয়া, জগতপুর, খিলপাড়া, বন্দুয়া দৌলতপুর, হাসানপুরসহ দক্ষিণ আনন্দপুর এলাকার একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছেন।
রোববার (১ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ দশমিক ৫৩ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ফলে ফুলগাজী বাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া মুহুরী নদীর ও আনন্দ পুর ইউনিয়নের খিলপাড়া এলাকায় সিলোনিয়া নদীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের দুটি অংশে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে এখনো পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালে দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া এলাকার মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধে ফাটল ও ধসের ঘটনা তারা প্রথম দেখতে পান। তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাউবোর পক্ষ থেকে বাঁধ মেরামতের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। স্থানীয়দের আশঙ্কা, যদি রাতে উজানে বৃষ্টি হয় এবং নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, তবে এই বাঁধ আরও বেশি হুমকির মুখে পড়বে। তারা আরও জানান, মুহুরী নদীর পুরো বেড়িবাঁধটাই এখন নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানির চাপ বাড়লে এই বাঁধ যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, এই স্থানে আগে থেকেই ঝুঁকি ছিল। বৃহস্পতিবার থেকে ফাটল শুরু হলেও শনিবারের টানা বর্ষণে তা বড় হয়ে যায়। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আগে ব্যবস্থা নিলে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যেত, কিন্তু পাউবো সবসময় বাঁধ ভেঙে গেলে তবেই ব্যবস্থা নেয়।
দরবারপুর ও আনন্দপুরের বহু পরিবার বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, উজানে বৃষ্টি হলে নদীর পানি বেড়ে বাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি বা বেসরকারি কোনো কর্মকর্তা ফাটলকবলিত বেড়িবাঁধ পরিদর্শনে আসেননি। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামত না করলে আরও বড় ধরনের বন্যা ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএইচ/এমজে