ঢাকা, সোমবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০২ জুন ২০২৫, ০৫ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

ভূষণছড়ার ৪৫০ বাঙালি গণহত্যার বিচার এখনো হয়নি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪০, মে ৩১, ২০২৫
ভূষণছড়ার ৪৫০ বাঙালি গণহত্যার বিচার এখনো হয়নি

রাঙামাটি: রাঙামাটির বরকল উপজেলার দুর্গম ভূষণছড়া গ্রামে ১৯৮৪ সালের ৩১ মে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সংগঠন শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা নারী-শিশুসহ ৪৫০ বাঙালিকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।  

ওইদিন ভোর ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মাত্র চারঘন্টার ব্যবধানে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

শান্তিবাহিনীর তৎকালীন সামরিক কমান্ডার মেজর রাজেশ ওরফে মণি স্বপন দেওয়ানের নেতৃত্বে ১২৫ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এতে অসংখ্য বাঙালি আহত হয়েছিল। ঘুমের মধ্যেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় শতাধিক ঘর-বাড়ি, হারিয়েছে সহায় সম্বল।

শনিবার (৩১ মে) দুপুরে বরকল উপজেলার ভূষণছড়া গ্রামে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) উপজেলা শাখার আয়োজনে ফারুক ই আযম (রা:) দাখিল মাদ্রাসার মিলনায়তনে ৪১ বছর আগে নৃশংস গণহত্যার বিচারের দাবিতে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা গণহত্যায় নেতৃত্বদানের অভিযোগে মেজর রাজেশের বিচার ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসন দাবি করে বলেন, গণহত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও মেজর রাজেশ ওরফে মণিস্বপন দেওয়ান পার্বত্য শান্তিচুক্তির আওতায় সাধারণ ক্ষমা লাভ করেন এবং পরবর্তী সময়ে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একপর্যায়ে বিএনপি সরকারের প্রতিমন্ত্রীও হয়েছেন।  

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি নিধনের জন্য ভূষণছড়া গণহত্যাসহ সব হত্যার বিচার দাবি করে তারা বলেন, এক্ষেত্রে পার্বত্য শান্তিচুক্তি আইনগত বা সাংবাধিনকভাবে কোনো বাধা হতে পারে না। কারণ শান্তিচুক্তিতে শান্তি বাহিনীকে ফৌজদারি অপরাধের জন্য দায়মুক্তি দেওয়া হয়নি।

আলোচনা সভার পর গণহত্যায় নিহতদের কবর জিয়ারত, মিলাদ এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করা হয়।

এদিনে নিহতদের স্মরণে স্বপ্নচূড়া ফাউন্ডেশনের আয়োজনে পাঁচশ হতদরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ বরকল উপজেলা শাখার সভাপতি তসলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল গাজীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য মিনহাজ মুরশিদ, ভূষণছড়া গ্রামের ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আবু বক্কর সিদ্দিক, শাহ আলম সওদাগর, মো. আব্দুল হালিম, সুলতান আহমেদ মন্ডল, ভূষণছড়া ইউপির সাবেক সদস্য আব্দুল জলিল, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ জেলা কমিটির প্রতিনিধি কামাল উদ্দিনসহ গণহত্যার শিকার স্বজনরা আলোচনায় অংশ নেন।

এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।