ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সালতামামি

সালতামামি-২০২১

টিকা কূটনীতিতেই তৎপর ছিল সরকার

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
টিকা কূটনীতিতেই তৎপর ছিল সরকার

ঢাকা: ২০২১ সালে টিকা কূটনীতিতেই বেশি তৎপর ছিল সরকার। সারা বছর বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা পাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা ছিল।

এছাড়া করোনাকালে এই সময়ে বিভিন্ন দেশের প্রবাসী নাগরিকদের কর্মসংস্থানে নজর দিয়েছে সরকার। আর মুজিববর্ষ উপলক্ষে নানা কর্মসূচিওতে সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানসহ কূটনীতিকদের সরব উপস্থিতি ছিল।  

টিকা কূটনীতি জোরালো:

২০২১ সালের শুরু থেকেই টিকা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালায় সরকার। বিশেষ করে, চীন, ভারত, রাশিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব প্রভৃতি দেশের কাছে টিকা পাওয়ার জন্য দেন দরবার শুরু করে। সরকারের সে উদ্যোগ সফলও হয়। এছাড়াও কোভ্যাক্সের আওতায় বেশ কয়েকটি দেশ থেকে টিকা আনার জন্য কূটনীতিক প্রচেষ্টা ছিল চোখে পড়ার মতো।

৫ দেশের সরকার-রাষ্ট্র প্রধানদের সফর:

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহেন্দ্র রাজাপাকসে, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী, ভুটানের  প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকা সফর করেন। সে সময় বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ভিডিওবার্তাও পাঠান। এছাড়া এবারের বিজয় দিবসে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরব:

চলতি বছর ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান ৬ জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সরব ছিল সরকার। নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী কড়া সমালোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস:

চলতি বছর ১৭ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে একটি প্রস্তাব জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর এই প্রথম রোহিঙ্গাবিষয়ক কোনো প্রস্তাব জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। এই প্রস্তাব পাসকে বাংলাদেশ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করে। এছাড়াও রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারা বছরই কূটনীতি সরব ছিল। এদিকে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে এ বছর সন্ত্রাসীরা হত্যা করে। হত্যার ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে সরকার। তবে, মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত ও গ্রেফতার করা হয়।

বিশ্ব শান্তি সম্মেলন:

বছরের শেষ দিকে ৪-৫ ডিসেম্বরে ঢাকায় বিশ্ব শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করে সরকার। এ সম্মেলনে বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এদের মধ্যে ৫৯ জন প্রতিনিধি সশরীরে যোগ দেন। আর ৪০ জন প্রতিনিধি ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। সম্মেলনে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, শান্তিতে নোবেল জয়ী কৈলাশ সত্যার্থী, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, ব্রিটেনের সাবেক ফার্স্ট লেডি শেরি ব্লেয়ার, সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক তং, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, পূর্ব তিমুরের সাবেক রাষ্ট্রপতি জোসে রামোস-হোর্তা, ওয়ার্ল্ড ইসলামিক ইকোনমিক ফোরাম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ হামিদ আলবার প্রমুখ অংশ নেন। সম্মেলন থেকে বিশ্বে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
টিআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।