ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

জার্মান মুসলিম অ্যাথলেটরাও রোজা রাখেন

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
জার্মান মুসলিম অ্যাথলেটরাও রোজা রাখেন

সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস পেটের মধ্যে গুড়গুড় আওয়াজ তুলতে পারে। তা সত্ত্বেও জার্মানের শীর্ষস্থানীয় মুসলিম অ্যাথলটদের কাছে রমজানের গুরুত্ব আলাদা।

এ কারণেই তারা গুরুত্বের সঙ্গে রমজানের রোজা পালন করেছন। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্য বা পানীয় ছাড়া খেলাধুলা বিপদজনক।

গেলসেনকিয়ের্শেন মাঠে ফুটবল চর্চা করছেন সুলায়মান বায়সাল। সূর্যাস্তের আরো কিছু সময় বাকি তখনও। গত ১৫ ঘণ্টা ধরে কোনো ধরনের খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করেননি বায়সাল। রমজানের সময় ফুটবল চর্চা বন্ধ থাকে না।

আরো অনেক মুসলমানের মতো ২১ বছর বয়সি ইংরেজি এবং দর্শনের ছাত্র সুলায়মান বায়সাল পবিত্র মাস রমজানে রোজা রাখছেন।

এ কারণেই সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত অবধি কোনো কিছু না খেয়ে থাকেন তিনি। অন ইসলামকে বায়সাল বলেন, ‘(প্রাকটিসের সময়) প্রায়ই আমি একই ধরনের প্রশ্ন শুনি, তোমার কি কোনো পানীয়ের প্রয়োজন হয় না? তুমি কিভাবে না খেয়ে থাকো? আমার কাছে এ সব প্রশ্নের উত্তর একটাই, আমার এই মুহূর্তে কিছু পান করার দরকার নেই, সত্যিই নেই। ’

জার্মানিতে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় চার মিলিয়ন। এই দেশের মোট জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশ মুসলমান। সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমস’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জার্মানিতে শারীরিকভাবে সক্ষম মুসলমানদের ৯৪ শতাংশই রোজা পালন করেন। বায়সাল গত দশ বছর ধরেই রোজা রাখছেন।

বলা বাহুল্য, অ্যাথলেটদের রোজা রাখতে গেলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। মুসলিম অ্যাথলেটরা এসব মেনেই রোজা পালন করছেন।

জার্মানের স্থানীয় সময় রাত ন’টার দিকে ইফতার করেন বায়সাল এবং তাঁর পরিবার। এরপর ভোর তিনটায় সেহরি করেন তাঁরা। এ সময় এক লিটারের মতো পানি পান করেন বায়সাল।

বায়সালের প্রেরণা বায়ার্ন মিউনিখের ফ্রাংক রিবেরি, যিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তার দল ‘ইয়েগ হাসেল’র অর্ধেক সদস্যই রোজা রাখে। বায়সাল নয়-দশ বছর বয়সি খুদে ফুটবলারদের কোচ। বায়সালের রোজা পালনের বিষয়টিকে এই দলের সদস্যরা সম্মান করে।

বায়সাল জানেন, আমি যাতে দেখতে না পাই, সেজন্য আমার দলের খেলোয়াড়রা তাদের পানির বোতল লুকিয়ে রাখে। আমি তাদের বলি, ‘তোমাদের এটা করার দরকার নেই। বরং আমার সামনেই পানি পান করতে পারো। কিন্তু তারা আমার সম্মানে সেটা করে না। ’

জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ডিএফবি, জার্মান ফুটবল লিগ ডিএফএল এবং সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমস ২০১০ সালে যৌথভাবে জানিয়েছে, রমজান মাসে প্রফেশনাল ফুটবলাররা রোজা রাখা থেকে বিরত থাকতে পারেন। এই সুযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রচুর মুসলিম খেলোয়াড় রোজা রাখেন। আর এসব খেলোয়াড়রা- যেমন বায়ার্ন মিউনিখের ফ্রাংক রিবেরি, যিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন, বায়সালসহ অন্যদের প্রেরণা জোগান।

বায়সাল বলেন, ‘এই খেলোয়াড়রা সেরা লিগের এবং সেরা ক্লাবের খেলোয়াড়, তারা অনেক টাকা আয় করেন, অন্যান্য প্রফেশনাল খেলোয়াড়রা যা করেন তারাও তাই করেন এবং এত সবের পরও তারা রোজা পালন করেন। তারাই আমার উৎসাহ। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘন্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।