ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

টিপাইমুখ বাঁধ বন্ধে ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ

সালাহউদ্দিন আহমেদ, নিউইয়র্ক থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১০ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০১২
টিপাইমুখ বাঁধ বন্ধে ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): ভারত কর্তৃক একতরফাভাবে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ ও উজানে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের প্রতিবাদ এবং প্রস্তাবিত বাঁধ নির্মাণ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থতহবিল (আইএমএফ) ভবন এবং ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

একই দাবিতে আইএফসি স্টেট ডিপার্টমেন্টেও স্মারকলিপি প্রদান করেছে।

গত ৫ মার্চ আইএফসি এই কর্মসূচি পালন করে।

আইএফসির তত্ত্বাবধানে ওইদিন সকালে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন গিয়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ভবন ও ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
ওয়াশিংটন ডিসি ও ভার্জেনিয়াসহ আশপাশের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও এ বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন।

বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের পতাকা হতে বিভিন্ন প্লাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে ভারত বিরোধী নানা স্লোগান দেন। তারা প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধসহ ভারতের বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ সাহায্য না দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক ও আইএমএর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন স্লোগান দেন।

ওইদিন দুপুর ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা বিশ্বব্যাংকের সমানে সমবেত হয়ে সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভ প্রদর্শণ শেষে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন।

প্রেসিডেন্টর পক্ষে তার সেক্রেটারি স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন। এরপর তারা আইএমএফ ভবনে এমডি বারাবর স্মারকলিপি প্রদানের পর স্টেট ডিপার্টমেন্টে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করেন।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের এশিয়ান ডেস্কের ডেপুটি ডাইরেক্টর রবার্ট ব্লেইকের সেক্রেটারি স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।

সবশেষে বিক্ষোভকারীরা ভারতীয় দূতাবাসের সামনে সমবেত হয়ে গান্ধীজির মূর্তির সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আইএফসি নেতারা ভারতীয় হাইকমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

ভারতীয় হাইকমিশনারের পক্ষে তপন কুমার নামে এক কর্মকর্তা স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন।

এসময় ভারতীয় কর্মকর্তার হাতে সৈয়দ টিপু সুলতান তার লেখা ‘এ মুভমেন্ট ইন পারসুইট অব রিজল্ডিং ওয়াটার অ্যান্ড এনভারনমেন্টাল প্রবলেম ইন সাউথ এশিয়া’ গ্রন্থটিও হস্তান্তর করেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা বলেন, প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে বৈরী আচরণ করছে।

তারা উজানে ভারতের এক তরফা পানি প্রত্যাহারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ভারতের এই বৈরী আচরণের ফলে বাংলাদেশ মরুভূমি হতে চলেছে। ফারাক্কার শিকারে পদ্মায় পানি নেই। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
বক্তারা জাতিসংঘের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের পানি সমস্যা সমাধানেরও দাবি জানান।

মানববন্ধনে সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ টিপু সুলতান বলেন, ‘আমরা ভারত-চীন বা নেপালের করুণা চাই না। আমরা চাই ভারত, চীন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে মেকং রিভার কমিশনের আদলে কমিশন গঠন করে এই অঞ্চলের পানি সমস্যার সমাধান। ’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আইএফসির অন্যতম উপদেষ্টা ড. গোলাম ফরিদ আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, আব্দুর রহীম হাওলাদার, টিপাইমুখ বাঁধ ওজনপার্ক কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল বারী ও সদস্য সচিব মীর নূরনবী রহমান চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, এডভোকেট মিল্লাত উদ্দিন, সৈয়দ মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

এছাড়া্রও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন টাচিং সোলস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট তাহমিনা সুলতানাসহ অর্ধশতাধিক নারী ও পুরুষ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।