ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সিঙ্গাপুর

আমি জানি না ৫ বছর পর পত্রিকা থাকবে কি না!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৭
আমি জানি না ৫ বছর পর পত্রিকা থাকবে কি না! এজেএফ এর ফেলোদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছেন দ্যা স্ট্রেইট টাইমসের এডিটর এট লার্জ হান ফুক কুয়াং

সিঙ্গাপুর থেকে: অনলাইন মিডিয়ার দাপটে দ্রুত কমে যাচ্ছে ছাপার পত্রিকার বিক্রি। এটা শুধু সিঙ্গাপুর নয়, পুরো দুনিয়ায় গণমাধ্যমের অবস্থা একই। আমি নিজেও বলতে পারছি না, আগামী ৫ বা ১০ বছর পর আর ছাপার পত্রিকা থাকবে কি না। 

সিঙ্গাপুরের দাপুটে দৈনিক দ্যা স্ট্রেইট টাইমসের এডিটর এট লার্জ হান ফুক কুয়াং সোমবার সিঙ্গাপুরের ধোবিঘাটে তেমাসেক ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে এজেএফ এর ফেলোদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন।  

হান ফুয়াক বলেন, সম্প্রতি আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ জন ছাত্রের সামনে বক্তব্য রাখছিলাম।

আমি তাদের জিজ্ঞাসা করি কতজন আজ সকালে পত্রিকা পড়েছো? হ্যাঁ ! উত্তর ১ জনের কাছ থেকে পাওয়া যায়।

সিঙ্গাপুরে সাংবাদিকতার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ৫২ বছর আগে সিঙ্গাপুর স্বাধীন হওয়ার পর, লি কুয়ান ভাবেন নতুন ধরনের মিডিয়ার কথা। তিনি জানতেন রাষ্ট্র গঠনে মিডিয়ার ভূমিকার কথা। তিনি নতুন রাষ্ট্র গঠনে সরকারের সঙ্গী হয়ে মিডিয়াকে কাজ করতে বলেন। কারণ মিডিয়া যদি বেসরকারি খাতে চলে যায়, তারা প্রকাশকের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দেবেন। এর চেয়ে হয়তো সরকারের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দেয়া ভাল।  

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দৃষ্টিতে পৃথিবীর ১৮১টি দেশের মধ্যে সিঙ্গাপুর গণমাধ্যমের স্বাধীনতার র‌্যাংকিংয়ে ১৫১ তম। সেখানে যে কোন রিপোর্টের জন্য এডিটর ইন চিফ দায়ী থাকেন। এখানে সরকারের বিরুদ্ধে যায়, এমন কোন রিপোর্ট প্রকাশ করা থেকে সাধারণত বিরত থাকতে হয়।  

হান ফুয়াক বলেন, আমরা এমন কোন রিপোর্ট করি না যেটা রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হয়।  

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরে এখন অনলাইন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য যথেষ্ট কাঠামো থাকতে হবে। অনলাইনে যেন কোন ধরনের গুজব ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখে সরকার।  

তিনি বলেন, গত ২০ বছরে সিঙ্গাপুর সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক। সরকার এখানে গণমাধ্যমকে কোন চাপ দেয় না, তবে বুঝিয়ে দেয় কি করতে হবে।  

সিঙ্গাপুরে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা কোন নীতিমালা নেই। সাধারণ আইনেই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।  

তিনি বলেন, গণমাধ্যম যদি শতভাগ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চলে সেটা দেশের জন্য ভাল নয়। বরং সরকারের সমালোচনা করার স্বাধীনতা থাকা ভাল।  

আবারো অনলাইনের বিষয়ে ফিরেন তিনি। হান ফুয়াক বলেন, ছাপানো পত্রিকা আর অনলাইনের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। যাকে নিউ মিডিয়া বলা হচ্ছে। বর্তমান সময়ে দ্রুত ছাপানো পত্রিকার কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই টিকে থাকার জন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা নিতে হচ্ছে। তবে মনে হয় না বেশিদিন পাল্লা দিয়ে টিকে থাকা যাবে অনলাইনের সঙ্গে।  

সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে ১৯৮৯ সালে দ্য স্ট্রেইট টাইমসে পলিটিক্যাল এডিটর হিসেবে যোগ দেন হান ফুয়াক। ২০০২ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ২ বছর ম্যানেজিং এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের পর থেকে পত্রিকাটিতে এডিটর এ্যাট লার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এমএন/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।