ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

মিছিলে গুলি করে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২২
মিছিলে গুলি করে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারেনি: সাকি

ঢাকা: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সরকার এখন রাজপথে গণতান্ত্রিক দাবির মিছিলে গুলি করে হত্যা করা শুরু করেছে। ইতিহাস সাক্ষী রাজপথে মিছিলে গুলি করে কোনো স্বৈরাচারী ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।

মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ‘ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক প্রস্তাব’ শিরোনামে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় রাজনৈতিক প্রস্তাব পাঠ করেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

সূচনা বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ বলেন, ২০১৪ সালে জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে; ১৯৯৬ সালে এরকম একটি নির্বাচন হয়েছিল এবং সে-সরকার সেসময় পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে ২০১৮ সালে মধ্যরাতে ভোট হয়েছে। সরকার ও তার শরিকরা এতটাই নির্লজ্জ যে, তারা এখন সেই নির্বাচন নিয়ে হাসি ঠাট্টা করেন। বর্তমান রাজনৈতিক বন্দোবস্তে একটি গোষ্ঠীর হাতে গোটা দেশ ও রাজনীতি বন্দি হয়ে গেছে। এই প্রক্রিয়া বাংলাদেশকে বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমান সংসদের কোনো বৈধতা জনগণের মধ্যে নাই। শুধু শক্তির জোরে টিকে আছে। এই আমলাতান্ত্রিক গোষ্ঠীর শাসনের অবসান করতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর আমাদের লক্ষ্য। সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রের রূপান্তর আমরা চাই। বর্তমান বাস্তবতা আমাদের সামনে এমন বাস্তবতা হাজির হয়েছে যে একটি নির্বাচনও সম্ভব না। গত ৩০ বছরে শাসকশ্রেণির দলগুলো এই বন্দোবস্ত টিকিয়ে রেখেছে। যারাই ক্ষমতায় গেছে তারাই ক্ষমতাকে ব্যবহার করে টাকা বানানো বন্দোবস্ত করেছে। কাজেই একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ছাড়া বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিপদজনক খাদে গিয়ে দাঁড়াবে। ক্ষমতার বন্দোবস্ত পরিবর্তনের জন্য শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আওয়াজ ওঠা খুব জরুরি।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, সরকার এখন রাজপথে গণতান্ত্রিক দাবির মিছিলে গুলি করে হত্যা করা শুরু করেছে। ইতিহাস সাক্ষী রাজপথে মিছিলে গুলিতে হত্যা করে কোনো স্বৈরাচারী ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে যত বিরোধই থাকুক তাদের অভ্যন্তরীণ ঐক্য এক। আমরা একটা পরিবর্তন চাই, সবাই মিলে এই পরিবর্তনটা উপলব্ধি করতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচন কমিশনে নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন তিনি নিজেই রাতে ভোট করেছেন। তাহলে কোন নৈতিকতার বলে তিনি ও অন্যান্য সংসদ সদস্যরা কীভাবে বসে আছেন!

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, গত ৫০ বছরে জনগণের এজেন্ডা বা রাজনীতির এজেন্ডা সামনে আসেনি। রাষ্ট্রক্ষমতার সংস্কারকে রাজনীতির প্রধান এজেন্ডা বলতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নূরুল হক নূর বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবগুলো একত্রিত করলে আমরা একটি অভিন্ন পথ হয়তো পাবে।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু বলেন, গত ৫০ বছরে রাজনৈতিক প্রতারণার ইতিহাস বার বার ফিরে এসেছে। রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে অনেক সংগ্রাম হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৩/৪ বার নয় বরং স্থায়ী সমাধান দরকার। সংসদে উচ্চকক্ষ তৈরি করা দরকার।

মতবিনিময় সভাটি পরিচালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু। সভায় আরও বক্তব্য দেন  বাংলাদেশ জাতীয় লীগের সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ ও স্বদেশী আন্দোলনের আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভূইয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।