ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

পুলিশ পেটানোর অভিযোগে আটক আ. লীগ নেতার মুক্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
পুলিশ পেটানোর অভিযোগে আটক আ. লীগ নেতার মুক্তি

যশোর: যশোরে পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপুকে আটকের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টার দিকে আটকের পর মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।

তবে আটকের পর সোমবার মধ্যরাতে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালানো অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে এ তাণ্ডব চালিয়েছে। তবে পুলিশ এ ব্যাপারে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি।  

এদিকে মাহমুদ হাসান বিপুকে আটকের প্রতিবাদে যশোরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার রাত ৮টার দিকে যশোর পুলিশ লাইনে কর্মরত কনস্টেবল ইমরান সাদা পোশাকে পুরাতন কসবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এক নারীর সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে নারীর সঙ্গে গল্প করতে দেখে তার ওপর চড়াও হন। এ সময় নিজের পরিচয়পত্র দেখান পুলিশ কনস্টেবল ইমরান। পরিচয় পাওয়ার পরও তারা চড়াও হয়। একপর্যায়ে ইমরানকে শহীদ মিনার থেকে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ইমরানকে উদ্ধার করে। এ সময় অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।

যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, শহীদ মিনার এলাকায় সাদা পোশাকে থাকা দু’জন পুলিশ সদস্য নারী নিয়ে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বসেছিলেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন তাদের মারধর করে। হট্টগোল দেখে পাশের শেখ আবু নাসের ক্লাব থেকে মাহমুদ হাসান বিপু এগিয়ে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন। তিনি মারধরে সঙ্গে জড়িত নন। পরে পুলিশ তাকে রাত পৌনে ৯টার দিকে তুলে নিয়ে যান।

বিপুকে আটক করা নিয়ে দিনভর বিক্ষোভের পর বিকেলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। পরে তাকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় নেওয়ার পর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনার পর সোমবার (১১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে পুলিশ যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক, তার ছেলে পৌর কাউন্সিলর হাজী সুমন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য পৌর কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা, জেলা যুবলীগের সদস্য মনজুর আলম, এম এম কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান এবং যুবলীগ কর্মী সোহাগের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক জানান, তার বাড়িসহ পাঁচ থেকে ছয়জন নেতার বাড়িতে পুলিশ হামলা ভাঙচুর করেছে।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত যশোর-চুকনগর মহাসড়কের কেশবপুরে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া অভয়নগরে যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়েছে।  

এসব বিষয়ে জানাতে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে কল কার হলেও তারা আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজী হননি।

তবে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিপু ও তার লোকজন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে আইন ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২১
ইউজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।