ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে গৃহান্তরীণ থেকে মুক্ত করা, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা ও লাখ লাখ মানুষকে মিথ্যা মামলার হয়রানি থেকে মুক্ত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি।

মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনআরসি) এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমার কাছে যা মনে হয় দেশনেত্রীর গৃহান্তরীণ থাকাটা একটা বড় সংকট। তিনি গণতন্ত্রের নেত্রী। দীর্ঘকাল তিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাকে বের করে আনাটা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। দুই নম্বর হচ্ছে- আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যিনি বিদেশে আছেন তার বাংলাদেশে ফিরে আসা গণতন্ত্রের জন্যে বেশি প্রয়োজন এবং লাখ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা সেগুলোকে দূর করা।

তিনি বলেন, মূল বিষয়টা হচ্ছে- গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণের মধ্যেও সেই ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, এদেশের মানুষ সবসময় গণতন্ত্রের পক্ষে। তারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হয়েছে, তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে, তারা নিজেদের ভাষার অধিকার ফিরিয়ে আনতে জয়ী হয়েছে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে জয়ী হয়েছে। ইনশাল্লাহ এখনো গণতন্ত্রের এ যে সংগ্রাম, সমাজকে মুক্ত করবার যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামেও তারা জয়ী হবে।

সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে সারা পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে একটি গোষ্ঠীর স্বার্থে কী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে, কী রাজনৈতিক ক্ষেত্রে, কী সামাজিক ক্ষেত্রে এটা চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশে কী হচ্ছে? আজকে বাংলাদেশে যে বৈষম্য, মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন, ভোটের অধিকার হরণ, সংবাদপত্র-মত-ব্যক্তির স্বাধীনতা সব কিছু হরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ জনগণ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে না, এদেশ এখন আওয়ামী লীগ ও তার সুবিধাভোগী শ্রেণির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এ সরকারের গণতন্ত্রের সব কিছুকে হরণ করেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণ ও সব গণতান্ত্রিক দলের ‘ইস্পাত কঠিন ঐক্য’ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে কোনো কিছুই নেই। মানুষের যে মৌলিক অধিকার তাকে তারা (আওয়ামী লীগ) নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। অনির্দিষ্টাকালের জন্য ক্ষমতায় থাকতে তারা ২০১১ সালে সংবিধানে যে সংশোধনী পাস করছে তা চতুর্থ সংশোধনীর চেয়েও খারাপ। জনগণের ক্ষমতার উৎসকে তারা এ সংশোধনীর মাধ্যমে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। তারা জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না।

জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন,  সরকার রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিকে সংকটগ্রস্ত করে ফেলেছে। সমস্ত কিছু কর্তৃত্ববাদী, একজনের হাতে, একটা গোষ্ঠীর হাতে। রাষ্ট্র, প্রশাসন, সংসদ, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ সবকিছু। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রেখেছে অনিয়ম-অবিচারের বিস্তার হচ্ছে। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে তারা রাষ্ট্রকে বিপদজনক অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, এখন দেশে অণুবীক্ষণ কিংবা দুরবীক্ষণ কোনটা দিয়েই বাংলার গণতন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গণতন্ত্র তো দূরের কথা, ভোটের নিশ্চয়তাই নেই।

সাবেক সংসদ সদস্য বিএনআরসির পরিচালক জহিরউদ্দিন স্বপনের পরিচালনায় ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।