ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

বর্ধিত সভায় ‘কঠোর’ পুলিশি নিরাপত্তা, তোপের মুখে ২ এমপি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৯
বর্ধিত সভায় ‘কঠোর’ পুলিশি নিরাপত্তা, তোপের মুখে ২ এমপি

নাটোর: নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়েছে। সভায় গত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার অভিযোগ এবং সাম্প্রতিক সময়ে দলের ইউনিয়ন ও পৌর কমিটির কাউন্সিল করা নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এবং নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনের সংসদ সদস্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সভায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত সবাই মিলে একজোট হয়ে আগামীতে দলের হয়ে কাজ করার অঙ্গিকার নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বর্ধিত সভা শেষ হয়।

 

শনিবার (০২ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত শহরের কান্দিভিটাস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ বর্ধিত সভা চলে। সভার শুরু থেকে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দলীয় কার্যালয় থেকে সাব রেজিস্ট্রি  অফিস পর্যন্ত সড়ক চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সব এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে পথচারীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের তল্লাশি করা হয়। এতে করে দিনভর ওই এলাকার মানুষদের দুর্ভোগসহ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এছাড়া দলীয় কার্যালয় প্রবেশের মূল গেটে আর্চওয়ে গেট বসানো হয়।  

সভাস্থলে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা আসেন এবং আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সেখানে বিপুল সংখ্যক সাদা ও পোশাকধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা।  ছবি: বাংলানিউজ

এ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোনো সময় জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এভাবে পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি। এ সভার জন্য এতো পুলিশ মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন ছিল না।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো সন্ত্রাসী দল নয়। সভা-সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন জরুরি। তবে আওয়ামী লীগের ঘরোয়া বা এ ধরনের বর্ধিত সভায় কখনও এতো বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের প্রয়োজন পড়ে না। কি কারণে বা কোন উদ্দেশে এতো পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে তা বোধগম্য নয়। এছাড়া এই বর্ধিত সভাকে ঘিরে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ঘটারও কোনো আশঙ্কা ছিল না। হয়তো কোনো অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এতো বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের জন্য বলা হয়নি। কেনো মোতায়েন করা হয়েছে তা তিনি জানেন না। পুলিশ মোতায়েন ও রাস্তা বন্ধ করে তল্লাশির কারণে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।  

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, শৃঙ্খলা বজার রাখার স্বার্থে সভা-সমাবেশ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়। এ ক্ষেত্রেও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, উপরের বিশেষ নির্দেশে সভা এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তাদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাজেদুর রহমান খান, জজ কোর্টের পিপি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সামছুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তুজা আলী বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।