ঢাকা : যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করতে এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ঈদের পরপরই কর্মসূচি নিয়ে ক্ষমতাসীন মহাজোটের মাঠে নামার কথা। এরই মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে জোটগতভাবে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ।
গত ১৬ জুলাই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় মহাজোটকে আরো শক্তিশালী করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এরই অংশ হিসেবে বিভাগীয় শহরে মহাজোটের মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়।
সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করা এবং তাদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মহাজোটকে আরো শক্তিশালী করা হবে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলা হবে। ঈদের পর পরই মহাজোটের পক্ষ থেকে সাত বিভাগে মহাসমাবেশ করা হবে। এই মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ও মহাজোট নেত্রী শেখ হাসিনাসহ জোটের শীর্ষ নেতরা বক্তব্য রাখবেন। ’
সভার পর দিন ১৭ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তবে সিদ্ধান্তের পর প্রায় দেড় মাস পার হলেও এ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরণের তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। এমনি কি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শরিকদলগুলোকেও কিছু জানানো হয়নি। বিষয়গুলো নিয়ে দ্রুতই শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে কি না সে ব্যাপারেও দলের কেউ কিছু বলতে পারছেন না।
মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন, ‘মহাসমাবেশের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের কোনো আলোচনা হয়নি, আমাদের কিছু জানানো হয়নি। মহাসমাবেশের কথা পত্রিকায় দেখেছি। ’
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে বলেন ‘এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি আমাদের কিছু জানানোও হয়নি। ’
অপর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও একই মন্তব্য করেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এর সাধারণ সম্পাদক শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মহাসমাবেশের ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করা হয়নি। ’
তবে এই ইস্যুতে অবশ্যই কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকা উচিত বলে মত দেন তিনি।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর সাধারণ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছু জানি না। আওয়ামী লীগই বলেছিলো ঈদের পর মহাসমাবেশ করবে। এটা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। তারা আমাদের দলকে বা ১৪ দলীয় জোটকে কিছু জানায়নি। ’
একই বিষয়ে কথা হয় গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিমের সঙ্গে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়নি। তাছাড়া এমন মহাসমাবেশ করতে মহাজোটগতভাবে যাবো কিনা যখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে তখন সিদ্ধান্ত নেবো। ’
অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফের কাছে তুলে ধরলে তিনি বলেন, এটা সত্য যে বিষয়টি নিয়ে এখনো জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আশা করি, ঈদের পর এ বিষয়ে জোটোরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ’
কবে নাগাদ মহাসমাবেশগুলো শুরু হতে পাবে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘ঘোষণা অনুযায়ী ঈদের পরপরই শুরু করা হবে। ’
বাংলাদেশ সময় ১০৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১০