ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

যশোরে ওসিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলেন এমপি আফিল

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১০

যশোর: যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিলউদ্দিন শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) লাঞ্ছিত করেছেন। যুবদল নেতা আব্দুল হামিদ হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ কর্মীদের নামে মামলা হওয়ায় সাংসদ রোববার বিকেলে ওসিকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এ কাণ্ড ঘটান।



শার্শা থানার সেকেন্ড অফিসারসহ সশস্ত্র কনস্টেবলরা ঘটনার সময় উপস্থিত থাকলেও তারা পাল্টা কোনো অ্যাকশনে যাননি।

শার্শা থানার ওসি এনামুল হক ও সেকেন্ড অফিসার মো. আসাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করে ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হবে।

তবে পরে রাতেই জানা যায়, এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে।  

তবে সাংসদ আফিলউদ্দিন ওসিকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

উল্লেখ্য, শার্শা উপজেলার পারুইঘুপি গ্রামে একদল সন্ত্রাসী কুপিয়ে হত্যা করে আব্দুল হামিদ নামে এক যুবককে। এ ঘটনায় ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে ১৬ জনকে আসামি করে রোববার শার্শা থানায় হত্যা মামলা রুজু করেন।

থানায় মামলা দায়েরের ঘটনায় স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ শেখ আফিলউদ্দিন বিকেলে ওসি এনামুল হক নিজ অফিসে ডেকে নিয়ে যান। সেকেন্ড অফিসারের কাছ থেকে খবর পেয়ে ওসি ছুটে যান আফিলউদ্দিনের মালিকানাধীন আফিল জুটমিলে।

ওসি এনামুল হক জানান, জুটমিলের অফিসকে ঢোকামাত্র সাংসদ আফিলউদ্দিন তার দিকে তেড়ে আসেন এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে কেন হত্যা মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তা জানতে চান। একপর্যায়ে এমপি আফিল তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় উপস্থিত সংসদ সদস্যের একান্ত সহকারী আসাদ, ঝিকরগাছার মুসা মাহমুদসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও ওসির ওপর চড়াও হন।
 
পরে থানার সেকেন্ড অফিসার ও কনস্টেবলরা ওসিকে উদ্ধার করে থানায় আনেন।

শার্শা থানার সেকেন্ড অফিসার মো. আসাদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘এমপি সাহেব ওসিকে শুধু লাঞ্ছিতই করেননি, বাপ-মা তুলে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন। ’
 
এদিকে ওসিকে পেটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য শেখ আফিলউদ্দিন। সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এলাকায় আসার পর দলীয় নেতাকর্মীরা আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসে যে, হামিদ হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের নিরীহ নেতাকর্মীদের নামে মামলা নিয়েছেন ওসি। সে কারণে আমি ওসিকে ডেকে এনে ঘটনা জানতে চাই। মামলা গ্রহণের আগে আমার সঙ্গে কেন পরামর্শ করলেন না তা জানতে চাইলে ওসি চুপ থাকেন। এ সময় আমি ওসিকে বলি, আমার সঙ্গে বেয়াদবি করবেন না। ঘটনা এটুকুই। ’
 
শার্শা থানার ওসি এনামুল হক জানান, তাকে লাঞ্ছনার বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘যুবদল নেতা হামিদ হত্যা মামলায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা নিরীহ দলীয় কর্মী নয়। মামলাটির এক নম্বর আসামির বিরুদ্ধে আরো দুটি হত্যা মামলা রয়েছে। ’

যশোরের পুলিশ সুপার দিদার আহমেদ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে জানান, সাংসদ শার্শা থানার ওসিকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ডেকেছিলেন। সেখানে তার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে।

তবে শারীরিক লাঞ্ছনা বিষয়টি পুলিশ সুপার এড়িয়ে যান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।