ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যার অভিযোগে পল্লবী থানায় দায়ের করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন আদালত।
শনিবার বিকাল ৪ টায় ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের বিচারক মোয়াজ্জেম হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৪ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
নিজামী রমনা থানার ফারুক হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ডে থাকায় তখন তার শুনানি হয়নি।
মামলার শুনানিতে মহানগর সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন আদালতকে জানান, নিজামী তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের ইসলামী ছাত্র সংঘের সংগঠক ও আলবদর বাহিনীর প্রধান ছিলেন। তাদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা আলোকদী গ্রামের ৩৪৪ জনকে হত্যা করে। তাদের সঙ্গে কারা এ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিলেন তা জানার জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
শুনানিতে আসামি পক্ষের আইনজীবী মশিউল আলম বলেন, ঘটনার ৩৮ বছর পর এজাহার দায়ের করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ এর আগেও দু’বার মতায় ছিল। তখন তারা যুদ্ধাপরাধী কিংবা গণহত্যা ইস্যুতে কোনো মামলা দায়ের করেনি। স¤পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে এ মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় ২০০৮ সালের ২৪ জানুয়ারি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসাবে নেওয়ার জন্য পল্লবী থানাকে নির্দেশ দেন। ২৫ জানুয়ারি পল্লবী থানায় মামলাটি এজাহার হিসাবে রেকর্ড করা হয়।
মামলায় জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা, জামায়াতের কার্যনিবার্হী পরিষদের সদস্য মীর আবুল কাশেমসহ ১০ জনকে এজাহারভুক্ত করে অপর ৭০ জনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল ফজরের নামাজের পর আসামিদের নেতৃত্বে ৬০-৭০ জন মিরপুরে তুরাগ নদীর পাশে আলোকদী গ্রামে ৩৪৪ জনকে হত্যা করে। বাদী ও তার পরিবার পুকুরের কচুরীপানার নীচে লুকিয়ে প্রাণে রা পান।
গত ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর দায়ের করা মামলায় জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের আটটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পল্টন, রমনা ও উত্তরা থানার মোট ৫ টি মামলায় তাদের ৪৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত আলাদাভাবে মোট ১৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১০
