ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

চসিক নির্বাচন: কেন্দ্রীয় আ.লীগ নেতাদের কাছে মহিউদ্দিনের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৫ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১০

চট্টগ্রাম: আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি মাহবুবুল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পেয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ও ােভের কথা জানিয়েছেন শতবর্ষী বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরী।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ রোববার সকালে আওয়ামীলীগ নেতারা নগরীর মোমিন রোডে বিনোদ বিহারীর বাসায় গেলে তিনি অকপটে সব অভিযোগ তুলে ধরেন।

তবে এসময় তিনি অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতি তার সমর্থনও পুনর্ব্যক্ত করেন।
 
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আওয়ামীলীগ নেতারা চট্টগ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনিও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

বিনোদ বিহারীর বাসায় বৈঠক শেষে রানা দাশগুপ্ত উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে বিগত দিনে যেসব কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেসব কারণ আমরা উল্লেখ করেছি। স্থানীয়ভাবে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে এসব সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন নেতারা। ’  

বৈঠকের পর দূরত্ব কমার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে নগরীর গোলপাহাড় এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবোত্তর সম্পত্তি পশুশালার অধিগ্রহণ নিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরোধ সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশনের হাত থেকে পশুশালা রা করতে গিয়ে আদালতে যান বিপ্লবী বিনোদ বিহারী চৌধুরীসহ সংখ্যালঘু নেতারা। মামলাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

সকাল ১০টার দিকে আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এবং সাবেক জাতীয় ছাত্রলীগ নেতা ডা. জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকু বিনোদ বিহারী চৌধুরীর বাসায় যান।

এরপর তারা বিনোদ বিহারী চৌধুরী এবং রানা দাশগুপ্ত সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।

বৈঠকের শুরুতে আওয়ামীলীগ নেতারা সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে তাদের সমর্থন চাইলে বিনোদ বিহারী চৌধুরী বলেন, ‘কাকে সমর্থন দেব, যাকে সমর্থন দিলে আমরা রাতে ঘুমাতে পারব না তাকে কীভাবে সমর্থন দেব। আবার মতিউর রহমান নিজামী যাকে সমর্থন দিয়েছে তাকেও তো আমরা সমর্থন দিতে পারব না। ’

মহিউদ্দিন চৌধুরীর  হয়রানি সম্পর্কে জানাতে শেখ হাসিনার সঙ্গে দু’বার দেখা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন এমন অভিযোগ এনে বিনোদ বিহারী বলেন,  ‘বঙ্গবন্ধু যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখনও তো আমাকে কখনও তার সঙ্গে দেখা না করে ফিরে যেতে হয়নি। ’

এসব অভিযোগের জবাবে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘আপনাদের মনে এত ােভ, অভিমান জমা আছে এটা চট্টগ্রামে না এলে আমরা বুঝতাম না। আমি প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে এসব কথা বলব। তবে আমরা চাই যুদ্ধাপরাধীমুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। এ ল্য অর্জনে আমরা বিপ্লবীর সমর্থন যেমন চাই, তেমনি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, মুক্ত চিন্তার সকল মানুষেরও সমর্থন চাই। ’

তবে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের মাহবুব আলম হানিফ বলেন, ‘আমরা শতবর্ষী বিপ্লবীকে নেত্রীর শুভেচ্ছা ও সালাম জানাতে এবং আর্শীবাদ দিতে এসেছিলাম। ভোট চাইতে আসিনি। এখানে তারা সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেছেন। আমরা সেগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেব। ’

বিকেলে নগরীর জেএম সেন হলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতারা।

বাংলাদেশ সময় ১৬৩০ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১০
আরডিজি/এমএমকে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।