ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

হরতালকে সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা চেয়ে এ সপ্তাহেই রিট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১০

ঢাকা: আগামী ২৭ জুন বিএনপি’র ডাকা দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি সামনে রেখে হরতালকে বেআইনি ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা চেয়ে চলতি সপ্তাহেই হাইকোর্টে একটি রিট হচ্ছে। রিটে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া, বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, স্বরাষ্ট্র সচিবসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হচ্ছে।

আগামী বুধবারের মধ্যে এ রিটটি দায়ের করার সম্ভাবনা রয়েছে।

২৭ জুনের হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে খালেদা জিয়াসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশের জবাব না পেয়ে এ রিট দায়ের করা হচ্ছে বলে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে নিশ্চিত করেছে সূত্র।

আওয়ামীলীগ সমর্থক আইনজীবী আজিজুল ইসলাম পাটোয়ারিসহ ৩ জনের পক্ষে গত ২৬ মে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়।  

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সাল থেকে এপর্যন্ত হাইকোর্টে হরতাল নিয়ে বেশ কয়েকটি রিট মামলা দায়ের হয়েছে। এব্যাপারে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বেশ কিছু নির্দেশনাসহ আদেশও রয়েছে।

২০০৬ সালের ১১ জুন ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলো আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। কর্মসূচির ঠিক আগের দিন গাজী রবিউল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে অবরোধের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বিশেষ বেঞ্চ ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৩ টায় সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে ১১ জুনের অবরোধ থেকে বিরত থাকার আদেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হলেও এ পর্যন্ত তার শুনানি হয়নি। এর ফলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।

অপরদিকে ১৯৯৯ সালে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে হরতালের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট হয়। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে  ওই বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালত ‘হরতালে উদ্ভুত সহিংসতাকে কেন ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না’-এই মর্মে রুল  জারি করেন। রুলের জবাব না আসায় ওই বছরের ১৩ মে বিচারপতি গোলাম রব্বানী এবং বিচারপতি লতিফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ হরতালজনিত সহিংসতাকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ গণ্য করে রায় দেন।

হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি’র তৎকালীন মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভুইয়া পক্ষভুক্ত হয়ে আপিল করেন। টানা  ৮ বছর পর ২০০৭ সালের  শেষ দিকে  ওই  আপিলের শুনানি শেষ হয়।

২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এম. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই মর্মে একটি আদেশ দেন যে, রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল আহ্বান করতে পারবে।

সর্বশেষ বেগম খালেদা জিয়াকে দেওয়া নোটিশে ২৭ জুন বিএনপি’র ডাকা হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়। নোটিশে উল্লেখ করা হয়, হরতালে মানুষের জান-মালের ব্যপক ক্ষতি হয়। মানুষের প্রাণহানি ঘটে, অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে।

নোটিশকারীরা আরও বলেন, ‘হরতালের ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হন। দরিদ্র মানুষের জীবিকার ওপর আঘাত আসে। হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়। রিকশাওয়ালা, দিনমজুরদের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। হরতালের আগে-পরে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা তাদের খোঁজ নেন না। তাদের কোন সহযোগিতা করেন না। হরতাল চলাকালে সংবিধানে দেওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়। ’

নোটিশে গত ১৯ মে পল্টন ময়দানের মহাসমাবেশে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ২৭ জুন দেশব্যাপী যে হরতাল আহ্বান করেছেন,  নোটিশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়।

জানা যায়, এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময় জুন ০৬, ২০১০
এমএম/এমএমকে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad