সিলেট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিএনপির কি এত আকাল পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে। যেই আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নাই, বিএনপির সদস্য হওয়ার জন্য তাদের কেন আহ্বান করতে হবে।
তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। এ দেশের প্রতিটি ধূলিকণাকে বিএনপি ধারন করে, লালন করে।
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে নগরের শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে সিলেট বিভাগে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী। তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত তারা নিজেদের অপকর্মের জন্য কোনো অনুশোচনা করেনি বা ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। উল্টো তারা গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দুষ্কৃতকারী বলে আখ্যায়িত করছে। তারা কীভাবে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে? আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২৩ সালেই রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা জানতাম, একদিন নিষ্ঠুরভাবে ফ্যাসিবাদের পতন হবে। যারা দেশের জনগণকে হত্যা করেছে, পঙ্গু করেছে, গুম, অপহরণ করেছে তাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশ যেন কোনো দিন আর স্বৈরশাসকের বা ফ্যাসিবাদের উৎপাদন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিএনপিই দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক বলে মন্তব্য করে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, বিএনপি জনগণের দল। এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার বিএনপি। এ জন্য বিএনপি জনগণের দল।
তিনি বলেন, বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না। মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদে দেশের একনায়কতান্ত্রিক সংবিধান বাকশালকে বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি জনগণের দল। এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার বিএনপি। এ জন্য বিএনপি জনগণের দল। বিএনপি সুসংগঠিত না থাকলে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি চালু হতো না।
সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন এদেশে ধর্ম-বর্ণ, ভাষা ও জাতির ভিত্তিতে বিভক্তি হবে না, সবাই বাংলাদেশি। দেশকে নতুন করে গড়ার মুহূর্তেই তিনি কুচক্রী মহলের হাতে শাহাদাত বরণ করলেন। কিন্তু তিনি বেঁচে রইলেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।
তিনি বলেন, যেই মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দিবেন, তিনিই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবেন।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) আলহাজ্ব জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেন, হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ নতুন প্রজন্মকে শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত করে দলের সদস্য করা হবে। তবে ফ্যাসিস্টদের দোসররা যাতে ভোল পাল্টে দলে প্রবেশ করতে না পারে সেই দিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম এ মালিক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রাসেদুজ্জামান মিল্লাত বলেন, সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যারা পুরোনো সদস্য তারা নবায়ন করব। আর যাদের বয়স ১৮ হয়েছে, কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য নন, যারা আমাদের দলের নীতি ও আদর্শে বিশ্বাসী, তারাই নতুন সদস্য হবেন। যারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে লালন করে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আস্থাশীল তারা নতুন সদস্য হতে পারবেন।
সিলেট জেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নুরুল হকের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে দায়িত্বে) তারিকুল আলম তেনজিন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এম নাসের রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি আহ্বায়ক ফজলুল করিম ময়ুন, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হক, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আরাফুল কবির খোকন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ও মহানগর, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনসহ সিলেট বিভাগের সব উপজেলা, পৌর এবং সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতারা।
এনইউ/আরআইএস