ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ছাত্রলীগকে সজাগ থাকার আহ্বান শেখ হাসিনার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩
ছাত্রলীগকে সজাগ থাকার আহ্বান শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অতন্দ্র প্রহরীর মতো সব সময় সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের স্মরণে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘ছাত্র সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ এর স্মার্ট বাংলাদেশের কান্ডারি হবে আমার এই ছাত্রলীগের ছেলেমেয়েরা। শুধু ৪১ এ থেমে থাকবে না বাংলাদেশ। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যানও আমি করে দিয়েছি। কাজেই এই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ বাধা দিতে পারবে না। অতন্দ্র প্রহরীর মতো ছাত্রলীগকে সব সময় সজাগ থাকতে হবে। সব থেকে বড় কথা শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষা-শান্তি-প্রগতি ছাত্র লীগের মূলনীতি। এই নীতি মেনেই ছাত্রলীগকে চলতে হবে।

উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমার একটাই লক্ষ্য এই বাংলাদেশটাকে উন্নত করা। সুকান্তের ভাষায় তাই বলতে চাই- এই বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি নবযাতকের কাছে এই আমার অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, ভয় নাই ওরে ভয় নাই। নিঃশ্বেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই। আমি সেই আদর্শ নিয়েই পথ চলি। আমার কোন ভয় নেই। এদেশের মানুষকে ভালোবাসি, স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো।

বিএনপি জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন তাদের কথা না। তারা জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে আবার ছিনিমিনি খেলতে চায়। কারণ তাদের জন্মই হয়েছে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা (বিএনপি) নাকি এখন গণতন্ত্র উদ্ধার করবে। যাদের জন্ম মিলিটারি ডিকটেটরের হাতে, মার্শাল ল এর মধ্যে দিয়ে, জাতির পিতাকে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে সেই ক্ষমতাধারীদের হাতে তৈরি সংগঠন বিএনপি।

তিনি বলেন, বিএনপি কোনদিন এদেশের কল্যাণ চাইতে পারে না। কল্যাণ চায়, তারা এদেশকে ধ্বংস করতে চায়।

স্বাধীনতার পর যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল সে চক্রান্ত এখনো শেষ হয়নি বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে, বিএনপি কয়টা ভোট পেয়েছিল তখন। কয়টা সিট পেয়েছিল। ৩০০ সিটের মধ্যে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট, ২৯টা পরে উপনির্বাচনে আরেকটা, ৩০টা সিট পেয়েছিল। এই কথা জনগণকে মনে করিয়ে দিতে হবে।  

ছাত্র লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,  ছাত্র লীগ নেতাকর্মী যে যেখানে আছে জনগণকে মনে করাবেন ওরা  তো ভোট করতে আসে না, ভোট চায়, ভোট পায় না।  ওরা  তো লুটেরা, জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, মানুষের শান্তি কেড়ে নেয়, মানুষের সম্পদ কেড়ে নেয়, মানুষের ঘর বাড়ি কেড়ে নেয়। ওরা মানুষের কল্যাণ করতে পারে না।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সঞ্চালনা করছেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

বিকেল পৌনে চারটায় জাতীয় সংগীত এবং এরপর ছাত্রলীগের দলীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে এ ছাত্র সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশ মঞ্চে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হন ছাত্র লীগ নেতাকর্মীরা। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে সমাবেশে যোগদেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

ঢাকার বাইরের যে নেতাকর্মীরা এসেছেন, তাদের অনেকে রাতে রওনা দিয়ে সকালে টিএসসিতে এসে পৌঁছান। সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকার বাইরের নেতাকর্মীরা বাস, লঞ্চ, ট্রেন, মাইক্রোবাসে ঢাকায় আসেন।

দুপুরের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সমাবেশ শুরুর আগেই সমাবেশস্থল লাখো ছাত্রছাত্রীর জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

সমাবেশ শুরুর আগে বৃষ্টিতে ভোগান্তি পড়েন ছাত্র সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা। হঠাৎ বৃষ্টিতে অনেককে খোলা মাঠ ছেড়ে আশপাশের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। বিকেল ৩টায় ছাত্র সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও বৃষ্টি-বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাতে কিছুটা বিলম্ব হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৩
এসকে/এমইউএম/এসকেবি/এনবি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।