ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

ইভিএম দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জিএম কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
ইভিএম দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জিএম কাদের

ঢাকা: দেশের সাধারণ মানুষ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বিশ্বাস করে না। এর মাধ্যমে ভোট দিতে চায় না।

তা ছাড়া এটি দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কাকরাইলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তিনি। সেখানেই এ মন্তব্য করেন জিএম কাদের।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, দেশের মানুষ মনে করে ইভিএম হচ্ছে ভোট চুরির আধুনিক মেশিন। তারা এটিকে বিশ্বাস করে না, এর মাধ্যমে ভোটও দিতে চায় না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে একমাত্র আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সবাই এর বিপক্ষে মত দিয়েছে।

তারপরও নির্বাচন কমিশন ইভিএম’এ ভোট নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অচল-অকেজো মেশিন সচল করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। দেশের মানুষ এই উদ্যোগকে সন্দেহের চোখে দেখছে। ইভিএম’র মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

জিএম কাদের বলেন, ইভিএ ‘র ওপর দেশের ৯০ ভাগ মানুষের আস্থা নেই। আমরা কারচুপির নির্বাচন চাই না। কারচুপির নির্বাচনে আমরা জিততেও চাই না। আমরা চাই মানুষের ভোটাধিকার। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে।

এ সময় বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএম কিনেছিল নির্বাচন কমিশন। গত ৪ মাস ধরে টানা কিউসি করে ৪০ হাজার ইভিএমে ত্রুটি পাওয়া গেছে। মাত্র ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্ভব।

সচল ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহণেই নানা বিড়ম্বনায় পড়ছেন সাধারণ ভোটাররা। আঙুলের ছাপ মেলে না, অকেজো হয়ে পড়াসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় অকেজো ইভিএম নির্বাচনের জন্য তৈরি করা দুরভিসন্ধিমুলক। আমরা মনে করি, অকেজো ইভিএম’এ নির্বাচনই বিপর্যস্ত হবে। মেশিনের সমস্যায় অনেক সময় নিজস্ব লোক দিয়ে হাতে লেখা ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের মানুষ মনে করছে সরকার ভোটের ফলাফল পাল্টে দিতে ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করতে চাচ্ছে।

জিএম কাদের আরও বলেন, এখন রাষ্ট্র, সরকার ও সরকারি দল একাকার হয়ে গেছে। সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে রাষ্ট্রের কর্মচারীরা। সরকারের কর্মচারীরা দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করবেন। সরকারের কোনো অন্যায় আদেশ মানতে তারা বাধ্য নয়। পুলিশ ও প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী। দেশের প্রতিটি দল বা মানুষকে সমান চোখে দেখতে হবে। সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, জাতীয় মৎস্যজীবী পার্টির সভাপতি আজহারুল ইসলাম সরকার, সাধারণ সম্পাদক মীর সামছুল আলম লিপটন, কেন্দ্রীয় নেতা পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী, হাফিজুর রহমান চৌধুরী, আবুল কাশেম, বাবু রতন সরকার, ফারুক হোসেন, গাজী কামরুদ্দিন, মাহমুদুল হাসান উজ্জ্বল, আনোয়ার হোসেন, আলমগীর হোসেন, আকাশ দেওয়ান।

মৎস্যজীবী পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর রিপনের সঞ্চালনায় সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস-চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, হুমায়ুন খান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন দেওয়ান, এম এ সোবহান, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সমরেশ মণ্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আবু ওয়াহাবসহ  মৎস্যজীবী পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
এসএমএকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।