ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য আমরা যুগপৎ আন্দোলনে: মন্টু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য আমরা যুগপৎ আন্দোলনে: মন্টু

ঢাকা: গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেছেন, ক্ষমতা দখলের জন্য নয়, জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য আমরা যুগপৎ আন্দোলনে শামিল হয়েছি।

সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আরামবাগে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণফোরাম নেতা ও বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতাদের সঙ্গে সংলাপের পর তিনি এ কথা বলেন।

মন্টু বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনে যত কারাবন্দি আছে বিনা অপরাধে বিরোধী মতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে গ্রেফতার হয়েছে এবং দীর্ঘদিন মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, রুহুল কবির রিজভী, আব্দুস সালাম ও শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। লাখ লাখ মানুষের নামে গায়েবি মামলা ও হাজার হাজার মানুষ গ্রেফতার করা হচ্ছে, এ দুঃসহ অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত করে রাষ্ট্রের কাঠামো বিধ্বস্ত করছে। রাষ্ট্রে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটাতে আন্দোলন তীব্রতর করতে হবে।

সে লক্ষ্যে আশু করণীয়, দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত করে জাতীয় সরকার নিশ্চিত করতে হবে।

খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সব রাজবন্দিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। গায়েবি মামলা ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা বন্ধ করতে হবে।

রাষ্ট্র ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে।

রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাধীনভাবে কাজ করার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান ও রাষ্ট্রের প্রধান বা নির্বাহী প্রধান হতে পারবে না।

গত ৩০ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের ‘গণমিছিল’ কর্মসূচি কেন গণফোরাম পালন করেনি প্রশ্ন করা হলে মন্টু বলেন, হঠাৎ সিদ্ধান্ত হওয়ায় আমাদের কয়েকজন নেতা অসুস্থ ছিলেন। আমরা যেসব কারণে সিদ্ধান্ত নেইনি। ওটা কোনো বিষয় না, আমরা সমস্যাটা সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছি যে, এ কর্মসূচিতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। আপনারা জেনে থাকবেন যে, আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। যেজন্য আমাদের একটু দেরি হয়েছে।  

যুগপৎ আন্দোলনকে আপনারা সরকার পতনের আন্দোলন বলে মনে করেন কিনা জানতে চাইলে গণফোরামের সভাপতি বলেন, অবশ্যই। যে আন্দোলনটা হচ্ছে, আমরা একটা অবাধ, সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই এবং এ নির্বাচনটা পরিচালনা করার জন্য একটা নির্দলীয় সরকারের প্রয়োজন আছে। আমরা দেখেছি যে, মাগুরার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছে এবং তাদের যুবলীগের এক নেতা সেদিন শহীদ হয়েছে। তারা কিন্তু সেদিন আন্দোলন করে তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করেছে। তারা (আওয়ামী লীগ) নিজেরা সংসদ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। খালেদা জিয়াকে এবং বিএনপি সরকারকে বাধ্য করেছে একটা অন্য নির্বাচন করে সেটাকে সংশোধন করে পাস করানোর জন্য। তাদের নিজেদের যদি স্বার্থে এগুলো করতে পারেন তাহলে জনগণের স্বার্থে কেন করতে পারবেন না। তারাও তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে এসেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের যে রায় হয়েছিল সেখানে তো বলা হয়েছিল আরও দুবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে। তাহলে বাধাটা কোথায়, সেটা আমরা বুঝতে পারছি না।

সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন কাদের, সভাপতি পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুল হক সরকার, আব্দুল হাসিব চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।