ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

তথ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বললেন গয়েশ্বর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
তথ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বললেন গয়েশ্বর গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে গণমিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরিফিনের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ যে মন্তব্য করেছেন তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি এজন্য জাতির সামনে তথ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলেন।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার পাথরাজে নিহত বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ আরিফিনের বাড়িতে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে এসে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সেদিন বিএনপি নেতা আরিফিনকে পুলিশ লাঠিচার্জ করে সাপ পেটানোর মতো করে পিটিয়ে মেরেছে। আর তথ্যমন্ত্রী বলছেন, তিনি হার্টফেল করে মারা গেছেন। মূলত তথ্যমন্ত্রী অমানবিক, তার মুখে মনুষ্যত্ব বোধের কোনো শব্দ উচ্চারণ হয় না। একটি জীবন কেড়ে নেওয়ার পর এমন কথা নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু না। মূলত হত্যার দায় বহন করার সৎসাহস তাদের নেই। তাই মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী। ’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘গত ২৪ ডিসেম্বরে বিএনপির দেশব্যাপী গণমিছিল কোনো সহিংস আন্দোলন ছিল না। সাংবিধানিক নিয়মের মধ্যে এবং পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পন্থায় সেদিনের কর্মসূচি ছিল। সেখানে বিনা উসকানিতে পুলিশের লাঠিচার্জ এটা কোনোমতে কাম্য না, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ’

তিনি বলেন, ‘একাত্তর সালের ডিসেম্বর মাসে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখার জন্য যুদ্ধ হয়েছিল। সেই বিজয়ের মাসেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গিয়ে জীবন দিলেন বিএনপি নেতা আরিফিন।  

বোদা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আফাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য দেন- রংপুর বিভাগের বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহেরুল ইসলাম কাচ্চুসহ নেতাকর্মীরা।

জানা যায়, নিহত আব্দুর রশিদ আরিফিন বিএনপির বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়ন শাখার সাবেক যুহ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে গণমিছিলের প্রস্তুতি নেয় বিএনপি। বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকে সেখানে। পরে দলটি গণমিছিল বের করলে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় গণমিছিলে আসা আব্দুর রশিদ আরিফিন (৫১) নামে এক বিএনপি নেতা নিহত হন বলে অভিযোগ করে বিএনপি।  

বিএনপির এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা আলাদা বিবৃতি দিয়েছেন। তারা উভয়ই দাবি করেছেন, বিএনপি নেতার মৃত্যু সংঘর্ষে নয়, হৃদরোগের কারণে হয়েছে। এছাড়া পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি-জামায়াতের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাঁচটি পৃথক মামলা দায়ের করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।