ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

‘বঙ্গবন্ধু যেমন চেয়েছিলেন, শেখ মনি বেঁচে থাকলে গড়তে পারতেন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২২
‘বঙ্গবন্ধু যেমন চেয়েছিলেন, শেখ মনি বেঁচে থাকলে গড়তে পারতেন’

ঢাকা: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, এখন অনেকেই শুধু বঙ্গবন্ধুকে জপে, আমি বলবো—আপনারা শুধু বঙ্গবন্ধু তাবিজ ব্যবহার না করে তার আদর্শকে গ্রহণ করুন। বঙ্গবন্ধু ও শেখ মনি কখনো ভোগের রাজনীতি করেননি, তারা সব সময় মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন।

তিনি বলেন, মানুষের জন্যই তারা বারবার জেলে গিয়েছেন। মনি ভাইকে বঙ্গবন্ধু চিরকুটও লিখে দিয়েছিলেন—আমি মারা গেলেও এ দেশ স্বাধীন হবে। বঙ্গবন্ধু যেমনটা চেয়েছিলেন, মনি ভাই বেঁচে থাকলে তা গড়ে যেতে পারতেন। মনি ভাইকে বঙ্গবন্ধু এতটা ভালোবাসতেন। এই পরিবারটা ত্যাগের পরিবার, ভোগের পরিবার নয়। আর মনি ভাই যুব সমাজের আদর্শ।

শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮৪তম জন্মদিন উপলক্ষে রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নগর ভবন প্রাঙ্গণে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং শেখ মনির কনিষ্ঠ সন্তান ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর একটা শক্তি ছিল, তার নাম শেখ ফজলুল হক মনি। মুজিব বাহিনীর প্রধান ছিলেন তিনি। তার চাওয়া-পাওয়া ছিল না; বঙ্গবন্ধুর মতোই সাধারণ জীবন যাপন করতেন। স্বাধীনতার পর প্রতিবিপ্লবী আর অতিবিপ্লবী এক হয়ে যাচ্ছিল। তখন বঙ্গবন্ধু তাকে ডেকে বলেছিলেন, সোনার ছেলেদের নিয়ে যুবলীগ গঠন করতে। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, যুব রাজনীতির মহাপ্রাণ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিক, লেখক ও সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি বাংলার ইতিহাসে সংগ্রাম ও সাফল্যের অসংখ্য অকাট্য দলিল রচনা করে গেলেন মাত্র ৩৫ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে। শেখ মনি বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা অসম্ভব হয়ে যেত; এটা ওই আর্মি অফিসাররা জানতো। তাই তারা তাকেও হত্যার পরিকল্পনা করেন।

শেখ সেলিম আরও বলেন, ষাটের দশকজুড়েই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ বাস্তবায়নে শেখ ফজলুল হক মনি নিযুক্ত ছিলেন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনে উপযুক্ত কর্মীদল ও সংগঠন গড়ার কাজে। ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম প্রণেতাও শেখ ফজলুল হক মনি। দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেও শেখ ফজলুল হক মনির জ্ঞান আহরণের অভিলাষ বর্তমান প্রজন্মের জন্য নিদারুণ শিক্ষা হতে পারে। তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায় বিশ্বের ঐতিহাসিক তথ্যবহুল বইয়ের সংগ্রহ যে কাউকে বিস্মিত করতো।

তিনি বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে দেশের তরুণ যুবসমাজে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতার বিকাশ ঘটান তিনি। প্রকাশ করেন তিনটি পত্রিকা। ১৯৭৪ সালে তাঁর সম্পাদনায় ইংরেজি দৈনিক দ্য বাংলাদেশ টাইমস প্রকাশিত হয়। দৈনিক বাংলার বাণী ও দ্য বাংলাদেশ টাইমস পত্রিকায় একই সঙ্গে ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষায়ই সম্পাদকীয় লিখতেন তিনি। এভাবেই পাকিস্তানিদের বর্বরতা, ধর্ষণ, গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের সার্বিক ফিরিস্তি তুলে ধরে বিশ্ব নজরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতেন দেশপ্রেমিক লেখক শেখ ফজলুল হক মনি।

সভাপতির বক্তব্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, বাংলাদেশের চে গুয়েভারা ছিলেন শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি। তিনি মেধাবী ছেলেমেয়েদের এবং ছাত্রদের নিয়ে গঠন করেছেন ছাত্রলীগ যুবলীগের মতো সংগঠন। তাদের নিয়েই গঠন করেছেন মুজিব বাহিনী, যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে দেশ গঠনে। তিনি যেমন ছিলেন মেধাবী তেমন ছিলেন বিপ্লবী। রণাঙ্গনেও নিজে যুদ্ধ করেছেন দেশের জন্য। শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি বাংলাদেশের বিপ্লবে সংগ্রামে একজন অবিসংবাদিত নেতা।

অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশন, নগর ভবন, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।