ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মুক্তমত

জ্ঞান ও আস্থা একে অপরের পরিপূরক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৪ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৭
জ্ঞান ও আস্থা একে অপরের পরিপূরক

জ্ঞানই শক্তি (Knowledge is Power)- এই কথাটি আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি ব্যবহার করি এবং অধিকাংশই আমরা এই কথাটি বিশ্বাস করি (মেনে চলি কতজন সেটা নিয়ে বির্তক আছে)। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত মানুষ এই উক্তি ব্যবহার করেছেন এবং করছেন। এ কথাটি সম্ভববত প্রথম ১৮১৭ সালে আমেরিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বাধীনতার ঘোষণার প্রধান লেখক থমাস জেফারসন ব্যবহার করেছিলেন ভার্জিনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব বোঝাতে। পরবর্তীতে অনেকেই এ কথা ব্যবহার করেছেন এবং বর্তমানে প্রেরণা যোগাতে আমরা সবাই এই উক্তিটি ব্যবহার করি। সফলতার চরম শিখরে পৌঁছুতে হলে জ্ঞান আহরণের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।

নিজের উপর আস্থা বা বিশ্বাস এমন একটি বিষয় যার উপর ভর করে আমরা আমাদের সপ্নকে জয় করতে পারি।

সকল প্রকার নেতিবাচক সমালোচনাকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রয়োজন নিজের উপর আস্থা বা বিশ্বাস।

আত্মবিশ্বাস শব্দের উপর বিশ্বাস আমাদের কমবেশী সবারই আছে এবং দেশে যত প্রেরণা যোগানো আলোচনা সভা, সেমিনার বা কর্মশালা হয়, সেখানে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির উপর জোর সবচেয়ে বেশী দেওয়া হয়। আমি নিজেও কিছুদিন আগে একটি ভিডিও’র মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কিছু কথা বলেছিলাম।

এখন আসি আমার আসল আলোচনায়। অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম জ্ঞান নিয়ে প্রচুর কথা বলেছি, আত্মবিশ্বাস তো আমার প্রত্যেক সেমিনারে বা কর্মশালায় প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে থাকে, কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি যে জ্ঞান এবং আস্থা একটি আরেকটির পরিপূরক। আমরা যদি সফলতাকে বিচার করতে যাই তাহলে দেখবো, দুটি জিনিসই সবচেয়ে বেশী কাজ করছে, আর তা হলো জ্ঞান এবং আস্থা। সফলতা অর্জন যদি আমার মূল উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে হাতিয়ার হিসেবে অবশ্যই পাশে রাখতে হবে আমার জ্ঞান এবং আস্থাকে।

আমরা সকলেই চাই অভাবনীয় সাফল্য শুধু একটি জিনিস না ঘটিয়ে, আর তা হলো জ্ঞান ও আস্থার অটুট বন্ধন। জ্ঞান এবং আস্থার মিলনই গড়ে দিতে পারে যে কোনো বড় সাফল্যের নিশ্চিত ভিত্তি। এটি একটি চিরন্তন সত্য যে, আস্থাকে বাদ দিয়ে জ্ঞানের যথাযথ ব্যবহার যেমন সম্ভব নয়, তেমনি জ্ঞান ব্যতীত আস্থা মূল্যহীন।

উদাহরণ ‍হিসেবে বলা যায়, আস্থা যদি হয় আমার গাড়ি, তাহলে জ্ঞান হলো আমার জ্বালানি। যদি আর একটু আলোচনা করি কেন এই জ্ঞান এবং আস্থা মিলে রচনা করে যে কোনো বড় সাফল্যের ভিত্তি।

জ্ঞান ব্যতীত আস্থাঃ রাহাত কে সবাই জানে খুবই সাহসী। তার নিজের উপর রয়েছে দৃঢ় আস্থা। যখন সে বিশ্ব বিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার টনি রবিনসন কে দ্যাখে, হাজার হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে প্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছেন, তখন রাহাতও তার নিজের আস্থাকে পুঁজি করে একদিন দাঁড়িয়ে যায় মানুষের সামনে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না। তখন
সে নিজের আস্থাকে অবিশ্বাস করতে শুরু করে। আস্থাকে সামনে নিয়ে, জ্ঞানকে দূরে রেখে বা অল্প জ্ঞান নিয়ে কিছু দূর অবশ্যই এগুনো সম্ভব, কিন্তু কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন অসম্ভব। অল্প জালানি সম্মৃদ্ধ গাড়ি সামনে এগুবে, কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছুবে না।

আস্থা ব্যাতীত জ্ঞানঃ সোহেলকে সবাই সম্মান করে তার সিমাহীন জ্ঞানের জন্য। তিনি সারাদিন ব্যস্ত সময় কাটান জ্ঞান অর্জনে। কিন্তু তার রয়েছে এক অজানা ভয়, সামনে পা বাড়িয়ে ব্যর্থ হবার শংকা। চুরি হবার ভয়ে জ্ঞান বিলানো থেকে দূরে থাকা। তাই সোহেল নিঃসন্দেহে জ্ঞানের বড় জাহাজ। কিন্তু সে এমনই এক জাহাজ যে কোন দিন সমুদ্রের ঢেউয়ের মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যায়নি।

অন্য কথায় সফলতা যদি পণ্য হয়, তাহলে জ্ঞান এবং আস্থা তার কাঁচামাল। আরেকভাবে বলা যায়, জ্ঞান শক্তি হলে আস্থা তা ব্যবহারের পদ্ধতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা,  জুলাই ২২, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।