ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

মুক্তমত

জাতীয় গ্রিডেও যোগ হতে পারে সোলার বিদ্যুৎ!

কবির উদ্দিন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৪
জাতীয় গ্রিডেও যোগ হতে পারে সোলার বিদ্যুৎ! ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ তার সমৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, তার অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সক্ষমও হয়েছে।



কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিকে উন্নীত করতে পেরেছে। যদিও বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করে এ অবস্থান ধরতে রাখতে হয়েছে।

দেশটির অর্থনৈতিক শনৈ শনৈ উন্নয়ন, নগরায়ন, দ্রুত বিকাশমান শিল্প এবং সমৃদ্ধি দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার বিদ্যুৎখাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৪ সালের জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুৎ ১০ হাজার চারশ ১৬ মেগাওয়াটে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে।

এ ছাড়া ২০১৬ সালের মধ্যে সরকার আরো ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে তুলনা করলে বাংলাদেশের ৬২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করতে পারছেন। দেখা গেছে, দেশটিতে জনপ্রতি হিসেবে বিদ্যুতের ব্যবহার ৩২১ কিলোওয়াট। তবে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় এ হার বেশ কম।
 
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে দিনের বেলা অফিস ও কারখানায় বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি হয়। মূলত দিনের বেলায় অফিস চলাকালে ও কারখানায় বেশি বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। সে কারণে অন্যখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে এসব শহর ও কারখানায় দেওয়া হয়।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য সোলার প্যানেল:
এদিকে, বিশ্বব্যাপী পুনর্ব্যবহারযোগ্য সোলার প্যানেল বিদ্যুতের ব্যবহার ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। বাংলাদেশও এভাবে সোলার প্যানেল ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হতে পারে। প্রাইভেট সেক্টরে গ্রামবাসী এই প্যানেল ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে অবিশ্বাস্যভাবে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি কমে যাবে। শুধু তাই-ই নয়, রাতে নিজেদের জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করে দিনের বিদ্যুৎ বিক্রিও করতে পারবেন তারা।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে ৩২ লাখ ৬৭ হাজার সাতশ খানা রয়েছে এবং জনপ্রতি আয় এক হাজার একশ ৯০ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশের মতো ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পুন:নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি উৎপাদনে সোলার প্যানেলের ওপর গুরুত্ব দিতে পারে। বিশেষ করে প্রাইভেট সেক্টরে এই প্যানেল ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে সোলার প্যানেল স্থাপনের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে, যেখানে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে সেখানে এটি কর্মক্ষম কিনা।

এক্ষেত্রে ৩২,০৬৭,৭০০ খানায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বাড়ি, স্কুল, অফিসের ছাদ, ছাদের কাঠামো, বাজেট বিবেচনায় রাখতে হবে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি গ্রামবাসীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, দুই হাজার পাঁচশ বর্গফুটের একটি বাড়ি দিনের বেলায় সূর্যের আলো থেকে চার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এটা সোলার প্যানেল স্থাপনের বড় একটি ইতিবাচক দিক।

এ সব বাড়ির সোলার প্যানেল একটি মিটারের মাধ্যমে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে সংযুক্ত থাকবে। এই মিটার সোলার প্যানেল থেকে জাতীয় গ্রিডে ও জাতীয় গ্রিড থেকে সোলার প্যানেলে বিদ্যুৎ আদান-প্রদানের হিসাব সংরক্ষণে ব্যবহৃত হবে। এটি দিয়ে বিদ্যুৎ বিক্রির হিসাবও রাখা যাবে। এতে করে সব পক্ষই লাভবান হবে ও দেশ বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে মুক্ত হবে।

কবির উদ্দিন
জিআইএস অ্যান্ড রমোট সেন্সিং অ্যানালিস্ট
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট, কাঠমাণ্ডু, নেপাল
ইমেইল: [email protected], [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।