ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

‘আল্লাহর মসজিদে’ দিনব্যাপী ইবাদত করেন রোজাদাররা

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
‘আল্লাহর মসজিদে’ দিনব্যাপী ইবাদত করেন রোজাদাররা

বরিশাল: বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার বড় কসবা এলাকায় অবস্থিত নয় গম্বুজ বিশিষ্ট ঐতিহ্যবাহী ‘আল্লাহর মসজিদ।’ পঞ্চাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে খান জাহান (র.) আমলে মসজিদটি নির্মিত হয়।

মসজিদটি এখন প্রাচীনকালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাশাপাশি এটি দেখতে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদের সঙ্গে অনেকাংশে মিল রয়েছে।

মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১১.৬৮  মিটার। অর্থাৎ ৩৮ ফুট করে।  এছাড়া মসজিদের দেয়ালগুলো প্রায় ২.১৮ মিটার বা ৭ ফুট চওড়া। পাতলা ইট ও চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত এ মসজিদটিতে বর্তমানে পূর্ব দেয়ালে ৩টি, উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালে ১টি করে মোট ৫ টি শিখরাকার সরু উঁচু খিলান বিশিষ্ট প্রবেশপথ রয়েছে।  আল্লাহর মসজিদ।  ছবি: বাংলানিউজপ্রবেশপথের খিলানের উপরের প্যানেলে কিছু ফুল ও ডায়মন্ড অলংকরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ছাদ বরাবর চারদিকে কার্ণিস রয়েছে, যেগুলো মসজিদের চারকোণে থাকা স্তম্ভের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি ছাদে ৯ টি গম্বুজ রয়েছে।

এছাড়াও মসজিদের অভ্যন্তরে ৪টি পাথরের স্তম্ভ রয়েছে এবং পশ্চিম দেয়ালে ৩টি মিহরাব রয়েছে।  মাঝখানের মিহরাবটি আকারে বড়।  আল্লাহর মসজিদ।  ছবি: বাংলানিউজঅপরদিকে মসজিদের চারপাশে রয়েছে প্রশস্ত হাঁটার রাস্তা। পূর্ব দিকে অর্থাৎ ভবনের সামনে রয়েছে সুবিশাল জায়গা এবং চারিপাশে ফুল-ফলের ঘেরাও। মসজিদ কমপ্লেক্সের উত্তর পূর্ব কোনে ওজুখানা থাকলেও মসজিদ কমপ্লেক্সের পূর্ব দিকে রয়েছে বিশাল দীঘি। যেখানে নারী-পুরুষদের গোসল ও ওযুর জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। এছাড়া এই মসজিদে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ খোকন বাংলানিউজকে জানান, বরিশাল জেলাধীন গৌরনদী উপজেলার বড় কসবা গ্রামে অর্থাৎ বর্তমান গৌরনদী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ প্রাচীন মসজিদটি অবস্থিত। গৌরনদী উপজেলা সদর থেকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক পথে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে আল্লাহর মসজিদ (কসবা মসজিদ) নামক স্ট্যান্ড। আর এ স্ট্যান্ড থেকে পশ্চিম দিকে ২০০ মিটার এগুতেই মসজিদের দেখা মিলবে। আল্লাহর মসজিদ।  ছবি: বাংলানিউজমসজিদটির নির্মাণের সময় ও ইতিহাসযুক্ত কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। লোকমুখে মসজিদটি নিয়ে নানান কাহিনী শোনা যায়, যার মধ্যে গায়েবানা নানান কাহিনীও রয়েছে। তবে আল্লাহর ঘর হিসেবে মসজিদকে মুসলমানরা প্রধান্য দিয়ে থাকেন আর সেই প্রধান্য থেকেই ‘আল্লাহর মসজিদ’ এই নামকরণ বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মাসুদ।  

স্থাপত্য এ নিদর্শনটি বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ মসজিদটির ভূমি-নকশা, বাহির ও অভ্যন্তরের গঠনশৈলী, ছাদের উপরের গম্বুজ, প্রবেশপথের অবস্থান ও অলংকরণের সাথে খান জাহান (রহ.) আমলে নির্মিত বাগেরহাট জেলার নয়গম্বুজ মসজিদের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।  আল্লাহর মসজিদ।  ছবি: বাংলানিউজতিনি বলেন, মসজিদটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি অনেকে দেখতেও আসেন। বাহির যতোই গরম থাকুক না কেন মসজিদের ভেতরটা বেশ ঠান্ডা থাকে।  রমজান মাসে, নামাজের পাশাপাশি এ মসজিদে বসেই রোজাদাররা দিনব্যাপী নানান ইবাদত করেন। এখানে ইফতারের আয়োজনের পাশাপাশি তারাবির নামাজও আদায় করা হয়। যেখানে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘন্টা, মে ১৬, ২০১৯
এমএস/এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অপার মহিমার রমজান এর সর্বশেষ